রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, একের পর এক বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের মৃত্যু ও মিথ্যা মামলায় তাঁদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সোমবার রাজ্য জুড়ে থানা ঘেরাওয়ের ডাক দেয় বিজেপি। রবিবারই এ কথা ঘোষণা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবং পরিকল্পনা মতো সোমবার বেলা বাড়তেই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে থানা ঘেরাও করে বিজেপি। কিছু কিছু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বচসা ও ধস্তাধস্তিও হয় এদিন।
আসানসোল, সোনারপুর, হাওড়া, হাবড়া, আলিপুরদুয়ার, বাগদা, কল্যাণী, নন্দীগ্রাম–সহ কলকাতায় যাদবপুর, সল্টলেক, বেহালা, ঠাকুরপুকুর ছাড়া একাধিক জায়গায় এদিন থানা ঘেরাও কর্মূসূচি পালন করে বিজেপি। এদিন সল্টলেকে বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তির সামনে থেকে মিছিল করে বিধাননগর উত্তর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। যাদবপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর সময় এদিন বিজেপি সম্পাদিকা শর্বরী মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ‘প্রতিদিন কেন বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের খুন হতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কেন জবাব দিচ্ছেন না? আমরা বিচার চাই।’
থানা ঘেরাও করা হয় শিলিগুড়ি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, আরামবাগেও। বিজেপি রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে আসানসোলে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করে বিজেপি। হাবড়া থানায় ঢুকতে না দিলে দীর্ঘক্ষণ থানার সামনে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। পরে তাঁদের থানায় ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। তমলুক থানার দিকে যাওয়ার সময় বচসা থেকে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন গেরুয়া–সমর্থকরা। পুরুলিয়া, রামপুরহাটেও থানা ঘেরাও করে বিজেপি।
বিষ্ণপুরে এদিনের কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ‘সারা রাজ্যে মদ খেয়ে সাধারণ মানুষের মতোই বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের খুন করে দেওয়া হয়েছে। এ কর্মকাণ্ডে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে পুলিশ। কিছু পুলিশ আধিকারিক বাংলাকে সর্বস্বান্ত করে ছাড়ছে। এ বছর পুজোর শুরু থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি–র ৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আজ কল্যাণীতে বন্ধ হচ্ছে, আগে মল্লারপুরে হয়েছে। এর পর সারা বাংলায় বন্ধ ডাকতে বাধ্য হব আমরা।’
এদিকে, এদিন থানা ঘেরাও কর্মসূচির মধ্যেই উঠে এল বিজেপি–র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এদিন দুপুরে বাগদায় নিজেদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। বাগদায় বিজেপি–র এক গোষ্ঠী বাইক মিছিল করে থানায় হাজির হলে দেখে আর এক গোষ্ঠী আগে থেকেই সেখানে হাজির হয়ে থানা ঘেরাও করেছে। এ নিয়েই নিজেদের মধ্যে বিবাদ থেকে সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। পরে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে।