রাজ্যে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বেড়ে গিয়েছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন হাজার-হাজার মানুষ। তারইমধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন। এই পরিস্থিতিতে করোনার বাড়বাড়ন্তের রুখতে সোমবার থেকে রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। সমস্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় মাধ্যমিক- উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলেছে। তারইমধ্যে মাধ্যমিক- উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষাও অফলাইনে নির্বিঘ্নে হয়েছে। আগামী ৭ মার্চ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা রয়েছে ২ এপ্রিল থেকে। ফেব্রুয়ারি থেকে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা কথা রয়েছে দ্বাদশ শ্রেণীর। এই পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকলে সেক্ষেত্রে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বা প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার ভবিষ্যৎ কী হবে? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও স্কুলের পাঠ্য -পুস্তক, মিড-ডে-মিল থেকে শুরু করে ফর্ম-ফিলআপ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ চলবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দফতর। সেইসঙ্গে পরীক্ষার বিষয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছেন, পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজ্যে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন শিক্ষক মহলের একাংশ। রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত মনে করেন, 'এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে মনোরোগ এবং অবসাদের অতিমারি শুরু হতে পারে।' প্রসঙ্গত সরকারি এবং বেসরকারি অফিস গুলিতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে নবান্ন। তাহলে স্কুলে ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে ক্লাস করা কেন সম্ভব নয়? তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। খুলছে শপিং মল, পানশালাও।
রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন সারাবাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণ নস্কর। তাঁর বক্তব্য, 'জানুয়ারিতে রাজ্যের শাসক দল প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেছে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সূর্য নমস্কার কর্মসূচি পালন করেছে কেন্দ্র। আর তাদের এই কার্যকলাপের জন্য মাশুল গুনতে হচ্ছে পড়ুয়াদের।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থসারথি রায়ও করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, 'পড়ুয়াদের নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় কারও মাথাব্যাথা নেই।' এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের পঠন পাঠন বন্ধ হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই তারা অনিশ্চিয়তায় পড়বেন বলে শিক্ষক মহলের। ' তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রাজ্য সরকারকেই করতে হবে' বলে দাবি জানিয়েছেন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি। এককথায় স্কুল বন্ধের পক্ষে নয় শিক্ষক মহল।