দক্ষিণ কোচবিহার কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির সেনগুপ্তের পদত্যাগের কারণ হিসেবে দেখা দিল প্রশান্ত কিশোরের দলের সদস্যদের প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগ।
স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের সঙ্গে টিম পিকে-র সদস্যদের ঘনিষ্ঠতা তাঁদের তৈরি করা রিপোর্টের উপরে প্রভাব বিস্তার করেছে বলে অভিযোগ বিধায়কের। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে তিনি জানিয়েছেন, ঘুষের বিনিময়ে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।
তৃণমূল জেলা কমিটি গঠন করা নিয়ে সম্প্রতি সমস্ত দলীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মিহিরবাবু। তার পর থেকে বন্ধ রয়েছে দলের ধর্মসভার অফিসও। একই সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্ব চাইলে বিধায়ক পদ ছাড়তে পারেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ঘটনা হল, জেলা ও ব্লক কমিটি গড়া নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে গত কয়েক মাসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক কমিটি গঠনের উদ্দেশে প্রত্যেক বিধায়কের থেকে তালিকা চায় রাজ্য নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে, দলের জেলা সভাপতিদের থেকেও তালিকা চাওয়া হয়। আবার টিম পিকে তৃতীয় একটি তালিকা প্রস্তুত করে, যাতে জোর দেওয়া হয় বিধায়কের দলীয় সাংগঠনিক কাজে অন্তর্ভুক্তি ও উদ্যোগ এবং তাঁর ভাবমূর্তির উপরে।
টিম পিকে-র এই তালিকা নিয়েই পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন মিহিরবাবু-সহ একাধিক তৃণমূল বিধায়ক। এই নিয়ে কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। সমাধান খুঁজতে কলকাতায় দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি ও প্রশান্ত কিশোর, কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ যে হয়নি তা মিহির গোস্বামীর পদ ছাড়াতেই প্রমাণিত।
মিহিরবাবুর ঘনিষ্ঠরা দাবি করেছেন, বিধায়কের বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত কোচবিহার এক নম্বর ব্লকের অধীনে নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এই পঞ্চায়েতগুলি নিয়ে একটি প্রশাসনিক ব্লক গঠন করেছে তৃণমূল। সেই ব্লকের সভাপতি হিসেবে যাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন মিহিরবাবু, তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলে বিধায়ক অনুগামীদের দাবি।
তাঁদের অভিযোগ, পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিমবাবুর ঘনিষ্ঠ নেতাকে। একই অভিযোগ উঠেছে জেলা কমিটি প্রধান বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও।