বেশ কয়েক বছর আগে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দমদমে এক জনসভা থেকে বলেছিলেন, 'তৃণমূলের ছেলেরাই চাকরি পাবে'। সম্প্রতি সেই মন্তব্যের 'ব্যাখ্যা' দিয়েছেন তিনি। এরই মাঝে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও একই সুরে দাবি করেছেন, তৃণমূল করলেই সরাকরি চাকরি মিলবে। নিয়োগ দুর্নীতিতে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, তখন তৃণমূল নেতাদের এহেন মন্তব্যে বিতর্ক ক্রমেই বেড়েছে। আর এবার সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। তৃণমূল নেতার দাবি, 'সরকারি চাকরি দলের চাকরি। তৃণমূলের ছেলেরা চাকরি পাবেন।' (আরও পড়ুন: সরকারি চোখরাঙানিকে থোড়াই কেয়ার, ডিএ-র দাবিতে সরকারকে 'শিক্ষা' শিক্ষকদের)
জানা গিয়েছে, বুধবার জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, 'যদি দলের ছেলে চাকরি পেলে ক্ষতি কী? তাঁরা সবসময় দলের জন্য কাজ করেন। দলে রয়েছেন, তাই দলের চাকরি পেয়েছেন। এটা তো অন্যায় নয়।' এদিকে স্ত্রীর চাকরি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এহেন প্রাক্তন বিধায়ককে তোপ দেগে সোমনাথ বলেন, 'কেন ভুলে গেলেন সুজনবাবু আপনাদের সময় চিরকুটে চাকরি হত। কাঁচরাপাড়া থেকে দমদম সেই সময় কংগ্রেস সহ অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের ছেলেদের চাকরি হয়েছে? বামফ্রন্টের সময় যদি বামকর্মীদের চাকরি হয় তাহলে তৃণমূলের সময় যদি তৃণমূলের ছেলেদের চাকরি হয় তাহলে অন্যায় কোথায়? আমাদের দল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। যে অন্যায় করে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেন স্বয়ং নেত্রী। কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে সেই সাহস নেই।'
আরও পড়ুন: রাজ্যে ডিএ আন্দোলনকারীদের দমাতে এ কী করছে সরকার! হতবাক সব মহল
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তাবড়-তাবড় তৃণমূল নেতাদের। এই আবহে সম্প্রতি দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে এবং নিজেদের 'স্বচ্ছ' প্রমাণ করতে ব্রাত্য বলেছিলেন, 'আমার কোটার চাকরি তিনি নিজের দলের লোককেই দেবেন।' এরপর এই একই সুরে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র বলেছিলেন, 'আমি সুযোগ পেলে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদেড় আবার চাকরি দেব।' এই সব মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা শাসকদলকে তোপ দাগছে ইতিমধ্যেই। এরই মধ্যে এবার জগদ্দলের বিধায়কের মন্তব্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে একটি নির্দিষ্ট দলের কর্মী, সমর্থকদের চাকরি দেওয়ার কথা কীভাবে বলতে পারেন মন্ত্রী, বিধায়করা? আর তাঁদের কথা মতো যদি চাকরি দেওয়াও হয়, সেই চাকরি থাকবে তো?