দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে এক কর্মিসভায় যোগ দিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন সদ্য নিযুক্ত বিজেপি–র কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। সর্বভারতীয় পদে বড় দায়িত্ব পাওয়ার ঠিক পরের দিন রবিবার বারুইপুরের ওই কর্মিসভায় সাংবাদিকদের অনুপম বলেন, তাঁর করোনা ধরা পড়লে আগেই তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরবেন। আর এই নিয়েই রাজ্যে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এদিনের ওই কর্মিসভায় প্রচুর সংখ্যায় বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা হাজির হন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূর বেশিরভাগ লোকজনের মুখে এদিন মাস্কই ছিল না। সাংবাদিকরা অনুপম হাজরাকে প্রশ্ন করেন, কেন তাঁর বা সভায় উপস্থিত লোকজন মাস্ক পরেননি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন অনুপম। তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা করোনার থেকেও বড় শত্রুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তাঁরা লড়াই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁরা (তৃণমূল) যেহেতু করোনা আক্রান্ত হয়নি তাই আমাদের কর্মীরাও আর কোনও ভয় পায় না। আমার যদি করোনা হয় তবে আমি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরব।’
এর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন অনুপম। ওই সভায় তিনি বলেন, ‘অমানবিকভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)। তাঁদের দেহ কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা মৃত বিড়াল বা কুকুরের সঙ্গেও এমনটা করি না।’
এ ব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কেবল উন্মাদ এবং অপরিণত ব্যক্তির দ্বারাই এ ধরনের কথা বলা সম্ভব। অনুপম হাজরার এই কথাগুলি শুনলে যে কেউ বুঝতে পারবে যে ও কী ধরনের মানুষ।’
উল্লেখ্য, ২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান অনুপম হাজরা। আর সেই ভোটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান অনুপম। ৪০ বছর ধরে বিজেপি–র সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাহুল সিনহাকে সরিয়ে বিজেপি–র কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদে আসীন হন অনুপম। এতে ক্ষুব্ধ রাহুল সিনহা এক বিবৃতিতে আক্ষেপ করে বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকে দলের সেবা করার পর এখন তৃণমূল থেকে আগত লোকজনের জন্য আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল।’