স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই কলকাতা হাইকোর্টে একটি হলফনামা জমা পড়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, একই পরিবারের সম্পর্কে আত্মীয়স্বজন অন্তত ১০ জন নাকি সবাই প্রাথমিক শিক্ষক পদেই চাকরি পেয়েছেন! এমনকী এমনই একটি নাম–তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় পরিবারের এক পুলিশকর্মী সদস্যের নামও রয়েছে। যিনি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দেহরক্ষী বিশ্বম্ভর মণ্ডল। গোটা বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। তিনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই হলফনামা জমা দিয়েছেন। সোমবার মামলার শুনানি হতে পারে।
কেন এই মামলা করা হল? কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, রমেশ মালিক নামে প্রাথমিক শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থী মামলা করেছিলেন। তখন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায়। যার রায় স্থগিত রয়েছে। তারই মধ্যে ওই ১০ জনের নামের তালিকা জমা দেন আইনজীবী সুদীপ্ত।
পার্থের দেহরক্ষী বিশ্বম্ভরের নাম উঠছে কেন? এই বিশ্বম্ভর মণ্ডলের আদি বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার অন্তর্গত দিবাকরপুর পঞ্চায়েতের প্রথমখণ্ড জালপাই গ্রামে। এখন তিনি কলকাতায় থাকেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীনই তাঁর দেহরক্ষী ছিলেন। তাঁরই স্ত্রী রিনা, দুই ভাই বংশীলাল ও দেবগোপাল প্রাথমিক স্কুলের চাকরি পান বলে অভিযোগ। এমনকী এই তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর মাসতুতো ভাই পূর্ণ মণ্ডল, মাসতুতো বোন গায়ত্রী মণ্ডল, মেসোমশাই ভীষ্মদেব মণ্ডল, মাসতুতো জামাই সোমনাথ পণ্ডিত, শ্যালক অরূপ ভৌমিক, শ্যালিকা অঞ্জনা মণ্ডল, প্রতিবেশী অমলেশ রায়েরও।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, বিশ্বম্ভরের সেজভাই বংশীলাল এখন চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষও। এলাকার তৃণমূল নেতাও। বিশ্বম্ভরের বাবা পান্নালাল মণ্ডল ছিলেন সিপিআইএম নেতা। হাইস্কুলের শিক্ষক হয়েও পান্নালাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। বংশীলাল ২০১৪ সালে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। যদিও বিশ্বম্ভরের ভাই বংশীলালের দাবি, ‘দাদা আগেই কলকাতা পুলিশে চাকরি পেয়েছিল। আমি ২০১২ সালের ‘টেট’ পরীক্ষার্থী ছিলাম। আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়েছি। বাকিরা যোগ্যতা প্রমাণ করেই চাকরি পেয়েছে।’