আগামী সপ্তাহে মঙ্গল-বুধবার শিল্পপতিদের চাঁদের হাট বসবে কলকাতায়। বিশ্ববাংলা কনভেশন সেন্টারে হাটে তাঁদের বিনিয়োগ ভাবনার পসরা নিয়ে উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মলেন। এই শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা মুকেশ অম্বানীর, থাকার কথা হিরানন্দানি গ্রুপের কর্ণধার নিরঞ্জন হীরানন্দানিরও।
বিশ্ববাংলা কনভেশন সেন্টারে বিকাল তিনটেতে শুরু হবে এই সম্মলেন। বক্তার তালিকায়ও বেশ লম্বা। মুকেশ অম্বানী ও নিরঞ্জন হিরানন্দানি ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন আইটিসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরী, জেবিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দাল, আরপি গ্রুপের সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, চ্যাটার্জি গ্রুপের চেয়ারম্যান পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, টিটাগড় ওয়াগনসের কর্ণধার উমেশ চৌধুরী, অম্বুজা গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, ভারতী এন্টারপ্রাইজের রাজন ভারতী মিত্তল। বক্তার তালিকার আদানি গোষ্ঠীর কেউ নেই। সম্মলনে গৌতম আদানি হাজির থাকবেন কিনা তাও জানা যায়নি। তবে আদানিদের কোনও প্রতিনিধি হাজির থাকতে পারেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্পেনেও গিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবে দেশে তাবড় শিল্পপতি যেখানে হাজির হবেন, সেখানে বিনিয়োগ প্রত্যাশা চড়া সুরে বাঁধা থাকবে।
তালিকায় বিদেশি অতিথিরা হলেন, ইলেইন এফ মার্শাল, সেক্রেটারি নর্থ ক্যারোলিনা, লর্ড ডেভিস, ইউকে ইন্ডিয়া বিজনেস কাউনসিলের চেয়ারম্যান, গ্রেজর্জ টেবিজোস্কিস পোল্যান্ডের বিদ্যুৎমন্ত্রী, কিম ইউং রক,জিওলানামো প্রদেশের গর্ভনর, ফ্যাব্রিজিও সালা, ইতালির আঞ্চলিক ভিপি।
তবে লোকসভা ভোটের আগে, অম্বানী, আদানি এবং হিরানন্দানি গ্রুপের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়োজিত শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত থাকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে শাসকদল যে রাজনীতি এবং বিনিয়োগকে এক পাল্লায় ফেলতে নারাজ, তা আগেই স্পষ্ট করেছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর কথায়, আদানিদের কাজকর্ম নিয়ে যতই বিরোধ থাকুক না কেন তা প্রভাব ফেলবে না রাজ্যের বিনিয়োগ পর্বে।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, পোশাক শিল্প, বিদ্যৎ ও পরিবহণ, মেনুফ্যাকচারিং, বিরেয় এস্টেট, কৃষি, স্বাস্থ পরিষেবা, পর্যটন, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং চলচিত্র শিল্পকেই ফোকাস করা হচ্ছে এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মলনে।
২০১১ সালে রাজ্য ক্ষমতার আসার পর মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই জোর দিয়েছেন শিল্পায়নে। সে ক্ষেত্রে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ভারি শিল্পের থেকে বেশি কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি করে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প। সে দিকে তাকিয়ে তিনি ক্ষুদ্র শিল্প, পর্যটন, পোশাক এবং চলচিত্র শিল্পের বিকাশে বেশি জোর দিয়েছেন। এবারও ফোকাস সে দিকেই। তাই শিল্পপতিরা কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান সেদিকে নজর থাকবে।
সম্মলনের মাঝে শিল্পপতিদের গঙ্গাবক্ষে নৌকবিহার এবং আলিপুর জেল মিউজিয়ার ঘুরে দেখানো হবে। বুধবার বিকাল তিনটেয় ধনোধান্য অডিটোরিয়ামে এই সম্মেলন শেষ হবে।