কাছের সহকর্মী থেকে একেবারে জেলের বন্দি আসামী। এটা দেখেও মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে কারও কারও। আবার জেলে কেমন আছেন, সেটাও জানতে ইচ্ছে করে। আসলে একই দলের দীর্ঘদিনের সৈনিক তিনি। আজ তাঁর পাশে দলীয় পদ নেই। নেই কোনও মন্ত্রীত্ব। একদা বিরোধী দলনেতা, তারপর বিধানসভার মুখ্যসচেতক থেকে পরিষদীয়মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ফলে অনেকটা সময় একসঙ্গে কেটেছে। হ্যাঁ, তিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলে বন্দি আসামী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর দুর্গাপুজোর পর বিধানসভায় এসে এই দীর্ঘদিনের সহকর্মীর কথা মনে পড়ল স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন তিনি অনেকের সঙ্গে। কিন্তু নেই শুধু পার্থ।
পার্থর সঙ্গে কী ঘটেছে? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তারপর থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন তিনি। তাই দুর্গাপুজোটা জেলেই কাটাতে হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন মন্ত্রী বিরুদ্ধে ইডি’র মামলার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিবিআইয়ের মামলাও। এমনকী চার্জশিটেও পার্থর বিরুদ্ধে নানা বিস্ফোরক তথ্য পেশ করেছে ইডি। এই পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে, এখনই পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।
ঠিক কী বলেছেন বিধানসভার স্পিকার? বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পার্থের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের খবর সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিধায়ক বা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার আগে স্পিকারের অনুমতি নিতে হয়। এক্ষেত্রে তাঁর অনুমতি নেননি বলে দাবি স্পিকারের। তিনি বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বিজয়ার পর প্রথম এলাম। সকলের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করছি। তাই জানতে ইচ্ছে করে উনি কেমন আছেন। আইনগত কিছু কারণে সম্ভব হচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই রাজ্য–রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। আর তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছে। দলীয় পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাঁকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কোনও মন্তব্য করতে চান না। সেখানে স্পিকারের খোঁজ নেওয়ার ইচ্ছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই দীর্ঘদিনের সহকর্মীকে মনে পড়াটা স্বাভাবিক। আর সেটাই বলে ফেললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।