সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বার্তা দেওয়া হয়েছিল, বিদেশের চাকরির টোপে কেউ পা দেবেন না। কারণ এটা একটা বড় প্রতারণা চক্র। কিন্তু তারপরও এই টোপে পা দিল কয়েকজন যুবক। এই টোপ ফেলে আমেরিকায় মোটা টাকার চাকরির লোভ দেখানো হয় ভিন্রাজ্যের যুবকদের। আর তাতে পা দিতেই অপহরণ করা হয় তাদের। এমনকী ওই যুবকদের পরিবারের থেকে লাখ লাখ মুক্তিপণ দাবি করা হয়। কলকাতা বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় এই অপরাধ চক্র চলছিল। এই অভিযোগ পেয়ে সেই চক্রের তিন পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। আর উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের ১৮ জন অপহৃত যুবককে।
ঠিক কী ঘটেছে বিধাননগরে? এই চাকরির লোভ এবং অপহরণ কাণ্ড নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে ওই যুবকদের নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের আমেরিকায় চাকরি করে দেওয়ার টোপ দেওয়া হয়েছিল। আর ওই যুবকদের পরিবারের থেকে মোটা টাকা নিয়েছিল ধৃতরা। এই ১৮ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। বিমানবন্দর এলাকার দু’টি হোটেলে তিনদিন রাখা হয়েছিল। ওই ১৮ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় ইকো আর্বান ভিলেজ এলাকার একটি বাড়িতে। সেখানে ১০ দিন রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই ১৮ জন যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে।
ঠিক কী ঘটেছিল সেখানে? সূত্রের খবর, এই ১৮ জন যুবককে ভাগ করে রাখা হয়েছিল। আর তাদেরকে দিয়ে বাড়িতে ফোন করানো হচ্ছিল। টাকা চাইতে বলা হচ্ছিল। তখন তারা বুঝে যায তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছে। এই ১৮ জন যুবককে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে আটজন যুবক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাই তাদের বাড়িতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় শোরগোল পনে গিয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই খবর প্রকাশ্যে আসে হরিয়ানার এক বাসিন্দা বিধাননগর কমিশনারেটে অভিযোগ করার পর। ওই বাসিন্দা তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে রাখা হয়েছে বলে জানান। এমনকী আমেরিকায় চাকরি দেওয়ার নাম করে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছে এই চক্র। আর ফোন করে আরও টাকা দাবি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। হরিয়ানার ওই যুবকের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে বিধাননগর কমিশনারেট। আর এই অপরাধ চক্র ধরা পড়ে যায়।