কিছুদিন আগেও ওই এলাকা দিয়ে যেতে গেলে বাসিন্দারা নাকে রুমাল চাপা দিতেন। আর সেই খালটাই বদলে গেল। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ভিআইপি রোডের পাশ দিয়ে যাওয়া খালটিকে কেন্দ্র করে বায়ো ডাইভার্সিটি পার্ক তৈরি করা হয়েছে। ঝকঝকে হয়ে গিয়েছে খালের জল। দমদম পার্ক, বাঙ্গুর অ্য়াভিনিউ, লেকটাউন এলাকা সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে এই সুন্দর সবুজে ঘেরা এলাকা।
চারপাশে বহুতল। ভিআইপি রোড ধরে গাড়ির সারি। তার পাশেই সবুজে ঘেরা এই জায়গাটিকে গড়ে তোলা হয়েছে। সৌন্দর্যায়নের নাম করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যখন কংক্রিটের চাদর দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা, তখন এই জায়গাটা একেবারেই অন্য়রকম।
প্রথমে ওই খালটিকে সংস্কার করা হয়। প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করা হয়। খালের ধারে হাঁটার জন্য় রাস্তা করা হয়েছে। চারপাশে নতুন করে গাছ বসানো হয়েছে। বসার জায়গাও রয়েছে। একঝলক দেখলেই অন্য়রকম লাগবে। সবুজে মোড়া গোটা এলাকা।
তবে কয়েকবছর আগেও বিষয়টি এমন ছিল না। ২০১৭ সালে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে অনুর্ধ্ব ১৭ ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের সময় এই জায়গাটা যাতে দেখতে পাওয়া না যায় সেকারণে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে এই খালটিও ক্রমে নাব্যতা হারাচ্ছিল। অন্যদিকে খাল সংস্কার করা নিয়েও নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছিল ক্রমশ।
এদিকে ওই খালে বছরের পর বছর ধরে নোংরা ফেলে গোটা এলাকাকে একেবারে দুষিত করে ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু অবশেষে মুক্তি। উল্টোডাঙা থেকে লেকটাউন ক্রশিং পর্যন্ত এই নয়ানজুলিটা রয়েছে। মূলত এলাকার নিকাশি হিসাবেও এটাকে ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৯,৩০,৩৪, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা এই জলাভূমির উপর নির্ভরশীল। সেই জলাভূমিকেই ফের বাঁচিয়ে তোলা হল।
সব মিলিয়ে ৬টি গেট করা হয়েছে এই পার্কের। ভিআইপি রোডে দুটি, দমদম পার্কের দিকে দুটি আর বাঙ্গুর অ্য়াভিনিউয়ের দিকে দুটি করে গেট থাকছে। টগর, নয়নতারা, জবা পিটুনিয়া, গাঁদা ফুলের গাছ বসানো হয়েছে। আবার পাখিরা আসছে। আসছে প্রজাপতির দল। আম, কাঁঠাল, জাম, তেঁতুল, লিচু গাছ বসানো হয়েছে। কেরল থেকে নারকেল গাছও আনা হয়েছে। দেওয়ালে দুর্গাঠাকুরের ছবি সব নানা ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে। এবার শীতে ঘুরে আসতেই পারেন।