বারবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সিবিআইকে নিজের মতো করে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার তা কার্যত প্রমাণ হয়ে গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য। এতদিন তিনি রাজ্যে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধেছেন। এবার তিনি দাবি করে বসলেন, সিবিআই তদন্ত শুরু হতেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা ঘরছাড়া হতে শুরু করেছেন। অর্থাৎ সিবিআই জুজু দেখিয়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের উপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে বলে কার্যত স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘২ মে–র পর যেভাবে বিজেপি কর্মীদের ঘরছাড়া হতে হয়েছিল তার উল্টোটা হচ্ছে এখন। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা ঘরছাড়া হতে শুরু করেছেন।’
একুশের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দলের নেতা–কর্মীদের উপরে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলতে শুরু করে বিজেপি। দাবি করা হয়, দলের নেতা–কর্মীদের ঘরছাড়া করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই নিয়ে আইনি লড়াইয়েও নামে বিজেপি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তারপর থেকেই সিবিআই–এর তদন্তকারীরা বিজেপির বাড়িতে বাড়িতে ঘুরছেন বলে অভিযোগ।
এই বিষয়কে সামনে রেখে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পাশে বসিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে পাল্টা ফল ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা যে অভিযোগ বারবার তুলছি সেটাই সত্যি প্রমাণিত হল। বিজেপি সিবিআই–সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করছে। তবে সুবিধা হবে না।’
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়। তারপর বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ এবং বাগদার বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূল কংগ্রেসে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। উত্তর–দক্ষিণবঙ্গে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানেও সাংসদ–বিধায়ক মিলে ১১ জন অনুপস্থিত ছিলেন। তাতে আরও স্নায়ুর চাপ বেড়েছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, ‘আর ক’টা দিন যাক। খুব তাড়াতাড়ি বিজেপি অফিসের সামনে যোগদানের লাইন পড়ে যাবে।’ এটা প্রচ্ছন্ন হুমকি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।