উপনির্বাচনের আগেই এখন কপালে ভাঁজ পড়েছে বিজেপির। কারণ রাজ্যে তাদের বিধায়ক সংখ্যা কমছে। ছিল ৭৭টি আসন। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৭১। এমনকী আশঙ্কা করা হচ্ছে তা ছয়ের ঘরে নেমে যেতে পারে। আর সেটা যদি হয় তাহলে রাজ্যসভা ভোট নিয়ে সমস্যায় পড়বে গেরুয়া শিবির। কারণ বিজেপি রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় দু’জন সাংসদ পাঠাতে গেলে কমপক্ষে ৬৯ জন বিধায়ক দরকার। কিন্তু সেটা যদি আরও কমতে থাকে তাহলে বিষয়টি সম্ভবপর হয়ে উঠবে না।
একুশের নির্বাচনের আগে যাঁরা বিজেপিকে সেফ হোম ভেবেছিলেন তাঁরা এখন ফিরে আসতে চাইছেন। এমনকী যাঁরা বিজেপিতে এখনও আছেন তাঁরাও আর থাকতে চাইছেন না। যা এখন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিধায়ক ভাঙনের কারণে শিরপীড়া দেখা দিয়েছে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের। যদিও আদি বিজেপির কিছু নেতা বলছেন, ‘দ্যাখ কেমন লাগে! পুরনোদের বাদ দিয়ে অন্য দলের নেতাদের নিয়ে মাতামাতি করলে এরকমই হয়।’
বিধায়ক ভাঙন শুরু হয়েছিল মুকুল রায়কে দিয়ে। তারপরে একে একে আরও তিন বিধায়ক চলে গিয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে। বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। আর কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়। এঁরা চলে যাওয়ায় সংগঠনও ভেঙে যেতে শুরু করেছে। যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কপালে।
বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ থেকে কমে এখন ৭১। বিজেপির দুই সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও নিশীথ প্রামাণিক বিধায়ক পদ ছেড়ে দেন। তারপর মুকুল রায় এবং তন্ময় ঘোষ, বিশ্বজিৎ দাস, সৌমেন রায় যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে। বিজেপি সূত্রে খবর, আতশকাচের তলায় থাকা বিধায়কদের মধ্যে সবার আগে রয়েছেন রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী। যে কোনও মুহূর্তে তৃণমূলে চলে যেতে পারেন।
আর কারা কারা যেতে পারেন? বিজেপি যে তালিকা তৈরি করেছে সেখানে রয়েছেন, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। তিনি রানাঘাট উত্তর–পশ্চিম আসনের বিধায়ক। এছাড়া গঙ্গারামপুরের সত্যেন্দ্রনাথ রায়, আরামবাগের মধুসূদন বাগ, কুমারগ্রামের মনোজ ওঁরাও। এছাড়া রয়েছে আরও কয়েকজনের নাম। সেগুলি যদি সত্যি হয় তাহলে বিজেপির কি হাল হতে পারে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বঙ্গ–বিজেপি নেতৃত্ব।
এই বিষয়ে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থে এসেছিলেন। বিজেপি-তে থেকে লাভ হবে না বলেই তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। গরু–ছাগল নাকি যে আটকে রাখব!’ আর নয়াদিল্লিতে দাঁড়িয়ে ইডি’র দফতরের বাইরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এখন ২৫ জন বিজেপির বিধায়ক আমাদের দলে আসতে চাইছেন। আমরা নিচ্ছি না। তাই মাথা নোয়াবো না।’ সুতরাং বিজেপির অন্দরে ভাঙন অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।