গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা রাজ্যে। তাতে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। এরপরই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে। বিরোধীরা বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছিলেন। আর এবার হিডকোর জমিতে শাসক দলের পার্টি অফিস গড়ে তোলার গুরুতর অভিযোগ উঠল। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি হিডকো কর্তৃপক্ষের ভূমিকার সমালোচনা করে আদালত।
আরও পড়ুন: বেআইনি বাড়ি না ছাড়লে হবে মামলা, পুলিশকে গড়তে হবে STF, কড়া অবস্থান হাইকোর্টের
হিডকোর জমিতে একাধিক রাজনৈতিক পার্টি অফিস রয়েছে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে হিডকোর জায়গায় থাকা তৃণমূলের পার্টি অফিস ভেঙে ফেলতে হবে। তার পরিবর্তে অন্য জায়গায় পার্টি অফিস সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রসঙ্গত, শহরের উন্নয়নের দায়িত্ব রয়েছে হিডকোর হাতে। অথচ সেই হিডকোর জমিতেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়তে হয় কর্তৃপক্ষকে। বিচারপতি হিডকো কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘নিজেদের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। তা রক্ষা আপনারা করতে পারছেন না। এভাবে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে।’ সেক্ষেত্রে হিডকোর নিজস্ব আইন আছে কি না তা জানতে চান বিচারপতি।
মামলাকারীর অভিযোগ, হিডকোর জায়গাতে আরও একাধিক বেআইনি নির্মাণ রয়েছে। আরও রাজনৈতিক দলের ৩৫ টি বিভিন্ন অফিস রয়েছে বলে তার অভিযোগ। মামলাকারীর দাবি, সেগুলি রাজারহাট ও নিউটাউন এলাকায় অবস্থিত।যদিও হিডকোর তরফে জানানো হয়েছে, পার্টি অফিসগুলিকে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও বেআইনি নির্মাণগুলি না ভাঙায় আদালতের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে হিডকো কর্তৃপক্ষকে।
উল্লেখ্য, এর আগে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে একের পর এক কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তবে গার্ডেনরিচ কাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরেই বেআইনি নির্মাণ যে কথাটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। তারপর থেকেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আরও কড়া মনোভাব দেখিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, বেআইনি নির্মাণ রুখতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কলকাতা পুরসভাও।