আইন দফতরের সচিবকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য মামলাটি শোনেন। আইন দফতর সেখানে দাবি করে, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা তাঁর নেই। তাই তাঁকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। সগুফতার আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, আইন দফতর একবছর ধরে এই বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। এখন আদালতে আপত্তি জানাচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি সৌজন্য : পিটিআই (PTI)

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরও এক ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে সময়মতো লাইসেন্স না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে এবার আইন দফতরের সচিবকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য আইন বিভাগের সচিবকে জরিমানা করে নিজের পকেট থেকে ওই টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে ওই ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকে লাইসেন্স দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

এদিকে প্রত্যেকটি থানা এলাকায় একজন করে ম্যারেজ রেজিস্ট্রার থাকেন। চন্দননগর থানা এলাকার আওতায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে থাকার জন্য আবেদন করেন সগুফতা আরা। তাঁকে হুগলির ওই এলাকায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে অনুমোদন দেন ইনসপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন। তখন তিনি রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তাঁকে সেই নিয়োগপত্র কিছুতেই দেওয়া হচ্ছিল না। এই পরিস্থিতিতে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তখন মামলার শুনানির পর বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য মামলাকারীকে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়ার নির্দেশ দেন। বাধ্য হয়ে ২০২২ সালের ২৮ জুন মামলাকারীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু শর্ত ছিল, আইন দফতর তাঁকে লাইসেন্স প্রদান করলে তবেই তাঁর নিয়োগ কার্যকর হবে।

অন্যদিকে সেই নিয়োগ কিছুতেই হচ্ছিল না। এই বিষয়টি নিয়ে সগুফতা আরার আইনজীবী সৌমেন দত্ত কলকাতা হাইকোর্টে বলেন, ‘‌সগুফতা আরাকে চন্দননগর থানা এলাকায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালের ২৮ জুন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য তাঁকে স্বীকৃতি দেন।’‌ তখন পাল্টা রাজ্যের দাবি, তিনি লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্য নন। রাজ্যের এই যুক্তি পত্রপাঠ কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলাটি শুনানি উঠতেই এই ঘটনা ঘটে।

ঠিক কী ঘটেছে আদালতে?‌ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য মামলাটি শোনেন। আইন দফতর সেখানে দাবি করে, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার হিসাবে কাজ করার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা তাঁর নেই। তাই তাঁকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তখন সগুফতার আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, আইন দফতর একবছর ধরে এই বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। এখন আদালতে আপত্তি জানাচ্ছে। এই কথা শোনার পরই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মামলাকারীকে লাইসেন্স দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। আর আদালতের নির্দেশ না মেনে মামলাকারীকে হেনস্তা করার জন্য আইন দফতরের সচিবকে ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশও দেন বিচারপতি।