কলকাতা হাইকোর্টে দুই বিচারপতির সংঘাত দেখেছেন আইনজীবীরা। এমনকী এই ঘটনার জেরে হস্তক্ষেপ করতে হয় সুপ্রিম কোর্টকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সৌমেন সেনের সংঘাত আজও অব্যাহত। তার জেরেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সংঘাত দেখা দেয়। আর অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগে এবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন আইনজীবীরা। অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে হবে বলে চিঠি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিলেন ২৫৩ জন আইনজীবী। আজ, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানমকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির দুর্নীতি মামলায় শুরু হয় বাক–বিতণ্ডা। তার জেরেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে ভরা এজলাসে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে কড়া প্রশ্ন করেন এজি কিশোর দত্ত। তাতেই কটূ কথা বলেন বিচারপতি।
অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার বিষয়ে আমার কাছে পাকা খবর রয়েছে।’ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পালটা বলেন, ‘সেটা কী?’ উত্তরে এজি কিশোর দত্ত বলেন, ‘আপনি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন।’ তাতেই রেগে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এই কথা ঠিক নয়।’ তারপরই এজি কিশোর দত্তের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘আপনি কীভাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল হয়েছেন সেটা আমার জানা আছে। একবার তো আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবার ফিরে এসেছেন।’ এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘এজির উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, নিন্দনীয়, অবমাননাকর এবং মানহানিকর।’
আরও পড়ুন: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা গেল দিল্লি হাইকোর্টে, অবসরকালীন ভাতা নিয়ে জট
এখানেই শেষ নয়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের আর এক বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সেই বিচারপতি সৌমেন সেন এবার বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্ট অপমানিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে বলার অধিকার সবার আছে। কিন্তু বিচারপতির শুধু অর্ডার দেওয়ার অধিকার আছে। এনাফ ইস এনাফ।’ তবে এজির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের প্রেক্ষিতে আজ চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘ওই ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের আইনজীবীদের অপমান বলে আমরা মনে করছি।’