হাই কোর্টে আবারও মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। গতকাল সিবিআই-এর হাতে শেখ শাহজাহানকে তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। তবে গতকাল উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ অমান্য করেছিল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে পালটা স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি শোনেনি। সুপ্রিম কোর্টের সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ এই বিষয়টি নিয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে যাওয়ার কথা বলেন রাজ্যকে। এই আবহে আজ এই নিয়ে ফের হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। এই পরিস্থিতিতে আজ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, আজ বিকেল ৪টে ১৫ মিনিটের মধ্যে সিবিআই-এর হাতে শাহজাহানকে তুলে দিতে হবে সিআইডি-কে। (আরও পড়ুন: মঞ্চের পিছনে সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের সঙ্গে দেখা মোদীর, কী কথা হল?)
আরও পড়ুন: ‘গোটা বাংলায় সন্দেশখালির ঝড় উঠবে’, মমতার সরকারকে উৎখাতের ডাক মোদীর
উল্লেখ্য, আজ কলকাতা হাই কোর্টে অনুপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। এই আবহে তাঁর এজলাসে থাকা শাহজাহান মামলার শুনানি হয় জাস্টিস হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে। এই আবহে হরিশ ট্যান্ডন জানান, প্রধান বিচারপতির রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনও কারণ নেই। যদিও রাজ্যের যুক্তি ছিল, যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে তারা স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছেন, তাই আজকেই যেন শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া না হয়। তবে রাজ্যের সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি।
আরও পড়ুন: 'বাংলার মা-বোনেরা আমার পরিবার… যখন ছোট ছিলাম…', ঋণ শোধের কাহিনী শোনালেন মোদী
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপরে হামলার মামলায় শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে। মাঝের ৫৫ দিন সন্দেশখালির 'বাঘ' নাকি ছিলেন এই রাজ্যেই। এদিকে পুলিশ জানায়, মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল শাহজাহানকে। তবে শাহজাহানকে নিয়ে প্রথম থেকেই চরম গোপনীয়তা রক্ষা করে এসেছে পুলিশ। এই আবহে শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছিল বসিরহাট মহকুমা আদালতের বিচারক। এরপরই প্রায় গ্রিন করিডর করে শাহজাহানকে ভবানী ভবনে নিয়ে আসা হয়। তবে ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে সেই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে যায়। তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও সিআইডি শাহজাহানকে ছাড়তে নারাজ। এই আবহে গতকাল ভবানী ভবনে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় সিবিআই কর্তাদের। এই সবের মাঝেই হাই কোর্টের তরফ থেকে রাজ্যকে তুলোধোনা করে পর্যবেক্ষণ করা হয়, শেখ শাহজাহানকে আড়াল করার চেষ্টা করার চেষ্টা করছে রাজ্য পুলিশ। আর আজ হাই কোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও এই নিয়ে ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। এরপর হাই কোর্টে দ্বিতীয়বারের জন্য ধাক্কা খেল রাজ্য।
প্রসঙ্গত, গতকালই শাহজাহান নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশের পরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে সেই মামলায় আপাতত শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে এই সংক্রান্ত মামলার পিটিশন দাখিল করেছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। এর আগে গতকালও সুপ্রিম কোর্টের সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মৌখিক ভাবে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে গতকাল সেই মামলা শোনেনি সুপ্রিম কোর্ট। তবে আজ পিটিশন দাখিল করা হয় শীর্ষ আদালতে। তাও সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ সেই মামলা শুনতে চায়নি। এই আবহে আপাতত হাই কোর্টের নির্দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। এই কারণে আজ বিকেলের মধ্যেই শাহজাহানকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে বলেছেন হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন।