গতকালই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'শেখ শাহাজাহানকে ধরার ক্ষেত্রে রাজ্যের হাত বেঁধে রেখেছে বিচার ব্যবস্থা'। তবে আজ হাই কোর্টের তরফ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সেই দাবি খারিজ করে দেওয়া হল। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হল, শেখ সাহজাহানকে গ্রেফতারির ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। পাশাপাশি সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। এদিকে আজ প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাবে না।' (আরও পড়ুন: সন্দেশখালির প্রতিবাদে বিজেপির ধরনায় 'না' কলকাতা পুলিশের, হাই কোর্টে সুকান্ত)
আরও পড়ুন: ঘরে ঢুকে পরপর গুলি, খুন তৃণমূলের উপপ্রধান, অভিযোগের তির জমি ব্যবসায়ীর দিকে
এর আগে গতকাল অভিষেক বলেছিলেন, 'ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার অভিযোগ করে ইডির দায়ের করা মামলার তদন্তের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বিশেষ তদন্তকারী দলের তৈরির নির্দেশ দেন। সেই দলে থাকার কথা ছিল রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইয়ের এক জন করে প্রতিনিধির। এর কিছুদিন পরে ইডি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন করে ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চায়। ইডির আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করে। স্থগিতাদেশ মানে তদন্ত হবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। স্থগিতাদেশ মানে কাউকে নোটিশ পাঠিয়ে ডাকা যাবে না। এটা কে করেছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এটা করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি। সেই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ৬ মার্চ। হাইকোর্ট, বিচারব্যবস্থা যদি রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের হাত পা বেঁধে দেয়, এফআইআর স্থগিত করে দেয়, তাহলে পুলিশ গ্রেফতার করবে কী ভাবে?’
এদিকে আজ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এই মামলার শুনানি চলাকালীন বলেন, 'পুলিশকে কোনও নির্দেশই দেওয়া হয়নি। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। ইডির মামলায় শুধু সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল।' এদিকে এই মামলার সঙ্গে শেখ শাহজাহানকে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। এ বিষয়ে নোটিসও জারি করা হয়েছে শেখ শাহজাহানের নামে। এদিকে সেই নোটিশ জারির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রারকে। আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে শাহজাহানের খোঁজ চলছে। তবে তিনি আজও অধরা। এরই মাঝে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এই আবহে এখন রাজ্য রাজনীতির সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় সন্দেশখালি। প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি। সেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। কয়েকদিন পরই সন্দেশখালিতে শাহজাহান, তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবু, উত্তমদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়। সেই শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে সন্ত্রাসের রাজ চালানোর অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মারধর, হুমকি, অত্যাচার, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী। পরবর্তীতে উত্তম এবং শিবুকে গ্রেফতার করা হয়। তবে শাহজাহান এখনও অধরা।