ইদানিং বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়ে জেলের মহিলা বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কড়া নির্দেশ দিয়েছে। এবার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক বন্দি দিদিকে জামিনে মুক্ত করতে কলকাতা হাইকোর্টে ঘুরছেন বোন। এই ঘটনা চোখে পড়ে অনেকের। কারণ ওই মহিলার সঙ্গে কিশোরী বোনঝি রয়েছে। বিচারের আশায় এই এজলাস থেকে ওই এজলাস এবং এক বেঞ্চ থেকে আর এক বেঞ্চে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওই মহিলা ও কিশোরী বোনঝি। নানা আইনজীবী থেকে শুরু করে আদালতের কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলছেন। তবে কী কথা বলছেন? জানা যায়নি।
এদিকে এই ঘোরাঘুরি করার সময়ই তাঁরা পৌঁছে গেলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। এখন এই বিচারপতি কলকাতা হাইকোর্টে সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। যদিও তাঁর এজলাসে জামিন করার মামলার শুনানি হয় না। কিন্তু তিনি এক আইনজীবীকে ডেকে গোটা বিষয়টি জিজ্ঞাসা করেন। তারপর সব কিছু শুনে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে এই মামলাটি বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে উত্থাপন করতে বলেন। এমনকী এই মামলা করার জন্য যাবতীয় নথি আইনজীবীকে হস্তান্তর করতে ওই মহিলাকে বলেছেন বিচারপতি। তাতেই ওই মহিলা একটু আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন।
অন্যদিকে আদালত সূত্রে খবর, বন্দি দিদি শাশুড়িকে খুনের দায়ে বন্দি রয়েছেন ২০১৭ থেকে। বন্দির নাম অসীমা বিশ্বাস। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নদিয়ার রানাঘাট আদালত। জেলে কিডনির অসুখে ভুগছেন অসীমা। অসীমার ১২ বছরের একটি মেয়ে আছে। মেয়েটি দিদা এবং মাসির কাছে থাকে। সেই বোনঝিকে নিয়েই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে হাজির হন অসীমার বোন অর্পিতা নাথ। এখানে এসে কিছু বুঝতে না পেরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ঢুকে পড়েন এবং বিষয়টি জানান। অর্পিতা বলেন, ‘আমার দিদি আর বাঁচবে না। তাই শেষ সময়ে যাতে মেয়ের কাছে থাকতে পারেন, সেটাই চাইছি। তাই সাজার বিরুদ্ধে জামিনের আর্জি জানাতে চাই।’
আরও পড়ুন: ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে কি মুখোমুখি হিরণ–দেব? গেরুয়া শিবিরে উঠছে জোর দাবি
এই মহিলার আইনজীবী সুনন্দা ভাট। আর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিষয়টি জানতে পেরেই সুনন্দাকে ডেকে এনে কথা বলেন। অসীমার জামিনের আর্জি আগে একবার খারিজ হয়েছে বলে জানতে পারেন বিচারপতি। নতুন করে আবেদন করতে ওই মহিলাকে পরামর্শ দেন বিচারপতি। এমনকী নতুন আবেদন করতে গেলে অসীমার চিকিৎসার কাগজ–সহ বেশ কিছু নথি দরকার। অর্পিতাকে সে কথা জানান বিচারপতি। আর ওই নথি আইনজীবী সুনন্দার কাছে দিতে বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলার শুনানির যাতে দ্রুত বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে উত্থাপন করা হয় তাও ওই আইনজীবীকে নিশ্চিত করতে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।