রাজ্যের প্রথম কমিউনিটি কিচেন তৈরি করেছিল তারা। করোনা পরিস্থিতিতে গরীব মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে এগিয়ে এসেছিল তারা। তা ২০০ দিনে পা দিল। এটা যে শুধু সিপিএমের তরুণ সদস্যদের জন্য সম্ভব হয়েছে তা নয়, এখানে সুশীল সমাজ এবং সিনেমা জগতের অনেকে অংশ নিয়েছিলেন। এটা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিন ধরে চলা কমিউনিটি কিচেন।
এপ্রিল মাস থেকে সিপিএমের কিছু সদস্য মিলে এই কিচেন খোলেন এবং বিনামূল্যে এলাকার গরীব মানুষদের মুখে দুপুরের খাবার তুলে দেন। এই কাজ করতে করতে একহাজার মানুষ দৈনিক সেখানে ভিড় করতে শুরু করেন। আর এই কমিউনিটি কিচেন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নাম দেওয়া হয়— শ্রমজীবী ক্যান্টিন।
এরপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি দিন। উঠে গিয়েছে লকডাউন। তখন পার্টি সিদ্ধান্ত নেয়, এবার সামান্য অর্থ নিয়ে মানুষের মুখে খাবার তুলে দেবে। ঠিক হয়, ২০ টাকার বিনিময়ে খাবার তুলে দেওয়া হবে। সেখানে থাকবে ভাতের সঙ্গে চিকেন, মাছ, ডিম বা পনিরের তরকারি। আর কোনও কোনও দিন সঙ্গে দেওয়া হবে মিষ্টিও। এই পরিকল্পনার কথা ভেবে তা চালু করেন সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত। কিছুদিন হল তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুদীপবাবু লেখেন, ‘মানুষের কাছে এটা বড় প্রাপ্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কিচেন সেটাই প্রমাণ করল।’ চলচ্চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা বাদশা মৈত্র–সহ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং কিছু স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে যাদবপুরে একটা ছোট মিছিলও করেন। এই কথা জানতে পেরে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন প্রখ্যাত পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়।
এখন এই কমিউনিটি কিচেন একটা রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এখন হাজার হাজার মানুষ এখানে খেতে আসেন। কেউ বিনামূল্যে খান, কেউ ২০ টাকা দিয়ে খান। এখন ২০টির বেশি কমিউনিটি কিচেন তৈরি হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বলে জানান সুদীপ সেনগুপ্ত। এখানে স্থায়ী রাঁধুনি ও কর্মী রাখা হয়েছে। তাঁদের মাসিক বেতন রয়েছে। গরীব মানুষ এখানে এখনও বিনামূল্যে খাবার পান। এই পরিষেবা দিতে দৈনিক ১০–২০ হাজার টাকা খরচ হয়। পুরোটাই অনুদান থেকে করা হয়।