সুন্দরবনে বাঘের হানায় প্রায়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে। সে ক্ষেত্রে সুন্দরবনের নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বাঘের হানায় কারও মৃত্যু হলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। তবে এবার থেকে গভীর জঙ্গল হোক বা বাইরের এলাকা সুন্দরবনে বাঘের হামলায় কারও মৃত্যু হলেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সম্প্রতি একটি মামলায় এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বিপদ মৎস্যজীবীর, জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেল বাঘ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল কৈখালির লখিন্দর নস্করের। তাঁর স্ত্রী শান্তিবালা নস্করের দাবি ছিল, জঙ্গলে কোনও জন্তুর হানায় কারও মৃত্যু হলে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তাঁর স্বামী বাঘের হানায় মারা গিয়েছিলেন। তারপরেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। সেই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শান্তিবালা নস্কর। উল্লেখ্য, সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় প্রায়ই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কিন্তু অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। মামলায় বনদফতরের তরফে জানানো হয়, সুন্দরবনের জঙ্গলকে দু’টি ভাগ করা হয়েছে। বাফার এরিয়া এবং কোর এরিয়া। বাফার এরিয়ায় মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার অনুমতি থাকলেও কোর এরিয়ায় ঢুকে মাছ ধরার কোনও অনুমতি নেই। আর সেখানে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় না। তাই ওই মৃত্যুর ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।দক্ষিণ ২৪ পরগনার বনবিভাগের তরফে জানানো হয়েছে আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করা হবে।
মামলাকারীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। এরকমভাবে অনেক মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দেয়নি বন দফতর। সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের এই রায় খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বহু পরিবার সুবিধা পাবেন। যদিও বন বিভাগের দাবি, এরফলে নিষিদ্ধ জঙ্গলে মাছ ধরতে চলে যাবেন মৎস্যজীবীরা । ফলে দুর্ঘটনাও বেশি হবে।
উল্লেখ্য, প্রশাসনের তরফ থেকে বার বার মৎস্যজীবীদের গভীর জঙ্গলে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়। তা সত্ত্বেও পেটের তাগিদে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রায়ই বাঘের হামলায় মৎস্যজীবীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গত কয়েকমাসে বাঘের হামলায় মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবীর। অনেক ক্ষেত্রেই দেহ টেনে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে গিয়েছে বাঘ। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাঘের মুখ থেকে মৎস্যজীবীদের ফেরানো গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।