ফের নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। বৃহস্পতিবার সকালে জোড়াবাগানের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৯ বছরের এক শিশুর দেহ। অভিযোগ, যৌন নির্যাতনের পর তাকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, প্রথমে সম্ভবত ওই নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। তারপর তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের গলায় আড়াআড়িভাবে ছুরি চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সেই ছুরি। তবে আপাতত পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে তদন্ত চলছে, খুব দ্রুত তারা কেসটি সলভ করে ফেলতে চাইছেন।
শিশুটির পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই বালিকা। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবারের লোকজন। তারপর, বৃহস্পতিবার সকালে জোড়াবাগানের বৈষ্ণব শেখ স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে ওই বালিকার দেহ উদ্ধার করা হয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানান, নাবালিকার চারটি দাঁত ভেঙে ঘটনাস্থলে পড়েছিল। নাবালিকার মাথার পেছন দিকের চুল টেনে ছেঁড়া হয়। অপরাধীর হাত থেকে বাঁচার জন্য ৯ বছরের ওই নাবালিকা প্রতিরোধের আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির প্রচুর চিহ্ন মিলেছে। ছাদে হাওয়াই চটি ও খালি পায়ের ছাপ মিলেছে।
জানা গিয়েছে, জোড়াবাগানে মামার বাড়িতে ঘুরতে এসেছিল ওই বালিকা। তারপরই এহেন নৃশংস অপরাধের শিকার হয় সে। তবে কে এই খুন করেছে তা এখনও জানা যায়নি। পাড়ার লোকদের ধারণা, কোনও পরিচিত লোকই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। ওই বালিকাকে খাবার বা খেলনার লোভ দেখিয়ে নিজের লালসা চরিতার্থ করেছে সে। ভোর ৬টা নাগাদ মামার বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি তিনতলা বাড়ির ছাদে ওই নাবালিকার অর্ধ বিবস্ত্র, গলাকাটা, রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় দোকানগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যে দুই বালিকার সঙ্গে নির্যাতিতা নাবালিকাকে শেষবার দেখা গিয়েছিল, অভিভাবকদের উপস্থিতিতে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) মুুরলী ধর জানান যে তদন্ত চলছে, খুব দ্রুত তারা কেসটি সমাধান করতে পারবেন বলে আশা করছেন। পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী চট্টোপাধ্যায় বলেন যে তাঁরা পুলিশ কমিশনের থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন। যদি এটা প্রমাণ হয় যে নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার পর খুন করা হয়েছে, তাহলে দোষীর যাবজ্জীবন সাজা হবে। ফাঁসিও হতে পারে বলে মনে করেন অনন্যা দেবী।