মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ সফর সেরে কলকাতায় ফিরতেই আমেরিকা সফরে যাওয়ার কথা ছিল বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। এক সপ্তাহ আমেরিকায় থাকার কথা ছিল রাজ্যপালের। মার্কিন মুলুকের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে রাজ্যপাল সেখানে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন। আর তাতেই যোগ দিতে আমেরিকা পাড়ি দিচ্ছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই আমেরিকা সফর আপাতত স্থগিত হয়ে গেল রাজ্যপালের। সুতরাং এখন আর ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ নিয়ে জটিলতা থাকল না বলেও মনে করা হচ্ছে।
এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুনের নেতৃত্বাধীন কমিটির আমন্ত্রণেই তাঁর বিদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ, সোমবার তিনি নিজেই সফর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন? সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত নয়াদিল্লির ছাড়পত্র মেলেনি বলেই রাজ্যপালের আমেরিকা যাওয়া হচ্ছে না। এক সপ্তাহের জন্য় আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল যা আপাতত হচ্ছে না। তার জন্য রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। সেই ছাড়পত্র মেলেনি। তাই আর মার্কিন মুলুকে যাওয়া হল না। আমেরিকা সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছিল বলেই ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ নিয়ে টানাপোড়েন চলতে থাকে। রাজ্যপাল আমেরিকা চলে গেলে এই শপথ বিশ বাঁও জলে চলে যেত। তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরোধ করেছিলেন।
অন্যদিকে সেই অনুরোধে তিনি কর্ণপাত করেননি। কোনও তারিখ ঘোষণা না করেই চলে যাবেন বলে ঠিক হয়েছিল। এবার তা নয়াদিল্লিই আটকে দিল। এই বাগড়া পেয়ে রাজ্যপাল হতাশ হয়েছেন। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া তিনি। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ওয়াশিংটনে ওই সংস্কৃতি উৎসব শুরুর কথা। সেখানে ভারতের সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র কলকাতার প্রতিনিধি হিসেবে ওই উৎসবে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই সফরের সব খরচ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট আয়োজক কমিটি। কিন্তু সফর বাতিল হওয়ায় আর মনে আনন্দ রইল না।
আরও পড়ুন: বিজেপি বিধায়কের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ, খুন না আত্মহত্যা? তদন্তে পুলিশ
তাছাড়া রাজ্যপাল এই খরচ ওই সংস্থা দিক সেটা চাননি। তাই তাঁকে আমেরিকা সফরে যেতে হলে রাজ্য সরকারের টাকায় যেতে হতো। তাতে রাজ্যের কোষাগারে চাপ পড়ত। সেখানে এই সফর বাতিল হওয়ায় চাপও অনেকটা কমল বলে মনে করা হচ্ছে। আর রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের সম্পর্ক অনেকটা অম্ল–মধুর। তাই এই সফর বাতিল হওয়ায় খুশি হচ্ছেন প্রতিপক্ষ। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে আনন্দ বোসের সস্পর্ক তিক্ততার জায়গায় পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই সার্চ কমিটি তৈরি হয়েছে বলে জানান রাজ্যপাল। সেখানে এই আমেরিকা সফর বাতিল হওয়ায় তিনি রাজ্যের কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রাজ্য ছেড়ে রাজ্যপাল যেতে চাননি বলে রাজভবন সূত্রে খবর।