উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিবাদ দীর্ঘ কয়েকমাসের। তারমধ্যেই সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যকে সরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। তা ঘিরে নতুন করে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত প্রকট হয়ে উঠেছে। সেই আবহে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। যে সমস্ত উপাচার্যরা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মানছেন তাদেরকে হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে কোনও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না, তৃণমূলের পাল্টা চিঠি দিলেন রাজ্যপাল
বুধবার সন্ধ্যায় উপাচার্যদের নিয়ে রাজভবন থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে বাধা দেওয়া উপাচার্যদের সতর্ক করা হয়েছে বলে জানানো হয়। আর তারপরেই বৃহস্পতিবার এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল। সেই পোস্টেই তিনি রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশকে বেআইনি নির্দেশ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যে সমস্ত উপাচার্যরা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের বেআইনি নির্দেশ মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে বাধা দিচ্ছেন তারা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী কাজ করছেন।’ এরপরেই তিনি লিখেছেন, ‘এটা ছাত্র সমাজের স্বার্থ রক্ষার জন্য। যেসমস্ত উপাচার্যরা এখনও অবধি নিয়ম না মেনে নির্দেশ জারি করেছে সেগুলি বাতিল করা হবে। এটা আচার্যের আদেশ।’
উল্লেখ্য, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘ বেশ কয়েকমাস ধরে। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। তা এখনও বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি এই সমস্যার সমাধানে কলকাতা এসেছিলেন দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি। বাংলায় এসে তিনি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পরেই তিনি জানিয়েছিলেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তারপরে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে জোরচর্চা শুরু হয়।
জানা যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠনের তরফে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছিল এই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উপস্থিত ছিলেন। আর তারপরেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে সরিয়ে দেওয়া হল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রজতকিশোর দে-কে।
এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেক্ষেত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য ইসি বৈঠক ডেকেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। কিন্তু, রাজ্যের তরফে নোটিশ দিয়ে জানানো হয়, এভাবে রাজ্যের অনুমতি না নিয়ে ইসি বৈঠক করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগের সন্ধ্যায় বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এবার আচার্যের এই নির্দেশ ঘিরে ফের শুরু হয়েছে তরজা।