বেআইনি বাড়ি ভাঙতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুরসভা। সোমবার ১০টি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। এবার এই বাড়ি ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শনিবার তৃণমূল বিধায়ক শশী পাঁজার এলাকায় ভেঙে দেওয়া হয়েছে একটি বেআইনি বাড়ি। ওই বাড়ির মালিকের অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন সেই জন্যই তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, সোমবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে হরিশ নিয়োগী রোডে আরও একটি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাড়ির মালিকের অভিযোগ, কাউন্সিলরের বিরোধিতা করার জন্যই তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যোগীর বুলডোজার নয়, নিজদের যন্ত্রেই বেআইনি নির্মাণ ভাঙল কলকাতা পুরসভা
শনিবার বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছিল তৃণমূল কাউন্সিলরদের । শুধুমাত্র বিজেপি করার জন্য বাড়ি ভাঙা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বাড়ির মালিক সুনীল সিং। অন্যদিকে, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গোপাল রায়ের দাবি, তিনি কাউন্সিলারের একাধিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। সেই কারণে তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, গোপাল অন্যজনের জমি দখল করে সেখানে বেআইনিভাবে বাড়িতে তৈরি করেছিল। সেই ব্যক্তি পুরসভার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাই তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে গোপাল বাবুর ছেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া। এখন তার পরীক্ষা চলছে। ফলে বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় তিনি অস্বস্তিতে পড়েছেন। প্রসঙ্গত, বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে নানাভাবে বাধা পেতে হচ্ছে পুরসভার কর্মীদের কখনও তাদের গায়ে জল ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে আবার কখনও ভাঙা অংশের উপরে বসে পড়ছেন বাড়ির মালিক। যার ফলে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছেন পুরসভার কর্মীরা। তবে মেয়র ফিরহাদের নির্দেশ, বেআইনি বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। যে কোনওভাবেই বেআইনি বাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে। এই অবস্থায় বেআইনি বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে যাতে কোনও রকমের সমস্যা বা আইনি জট তৈরি না হয় তার জন্য কার্যত বিনা নোটিশে বাড়ি ভাঙছে কলকাতা পুরসভা। এর জন্য ৪০০ (৮)– ধারায় এই বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, এই ধারায় কোনও বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে নোটিস দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় নোটিশ পাঠিয়ে বাড়ি ভাঙতে গেলে সেক্ষেত্রে সমস্যা হয়। তখন বাড়ির মালিকরা আদালতের দ্বারস্থ হয় ফলে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। সেই কারণে সময় নষ্ট না করার জন্যই এই ধারায় ভেঙে ফেলা হচ্ছে বাড়ি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ১০ টি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। তার মধ্যে ৫টি বাড়ির ক্ষেত্রে নোটিশ পাঠানো হয়নি।