প্রতিবছরই বিদ্যাসাগর সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে ৭-৮ জন আত্মঘাতী হয়ে থাকেন। গত ২০ দিনে বিদ্যাসাগর সেতু থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছেন দু'জন। বিদ্যাসাগর সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা রুখতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুলিশ এবং সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। কলকাতা পুলিশ চাইছে, সেতুতে জাল বসানো হোক। আবার তাতে আপত্তি জানাচ্ছে এইচআরবিসি। ফলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছে। কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, জাল বসালে সে ক্ষেত্রে জাল টপকে ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা কমানো যাবে। অন্যদিকে, এইচআরবিসির বক্তব্য, জাল বসালে সৌন্দর্য্য নষ্ট হতে পারে। তার চেয়ে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো ঠিক হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই ঝাঁপ দিতে গিয়ে কেউ কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। কয়েকদিন আগেই হুগলি ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন এক মহিলা। তারপরেই হেস্টিংস থানা এবং বিদ্যাসাগর সেতুর ট্রাফিক গার্ডের পক্ষ থেকে এইচআরবিসি কাছে চিঠি পাঠানো হয়। তাতে রেলিংয়ের উপরে জাল লাগানোর আবেদন জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সিসিটিভি ক্যামেরাগুলিকেউ ঠিক করার আবেদন জানানো হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, বিদ্যাসাগর সেতুতে ১০টি ক্যামেরা রয়েছে। তার মধ্যে ৬টি ক্যামেরা খারাপ হয়ে রয়েছে। আরও একটি ক্যামেরা দুর্ঘটনার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আপাতত তিনটি ক্যামেরা সেখানে কাজ করছে। এসবের কারণে সেখানে নজরদারিতে অসুবিধা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ক্যামেরাগুলি ঠিক থাকলে কোনও ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু এখন ক্যামেরার না থাকার ফলে সমস্যা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা রুখতে এইচআরবিসির তরফে বিদ্যাসাগর সেতুতে রেলিং বসানো হচ্ছে। তবে পুলিশের দাবি, রেলিং টপকে ঝাঁপ দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে। অনেকে রেলিংয়ে পা দিয়ে সহজেই উপরে উঠে পড়ছেন। সাম্প্রতিক দুটি ঘটনায় সেরকমই দেখা গিয়েছে। তাই তার পরিবর্তে জাল বসালে ওপরে ওঠার সম্ভাবনা কম। একইভাবে জিরাট সেতুতে জাল বসানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জাল দিলে সেতুর সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়ে যাবে। তার পরিবর্তে পুলিশি নজরদারি বাড়াতে হবে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup