রাজ্যের এক বিধানসভা ও এক লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে জয়জয়কার তৃণমূল কংগ্রেসের। এই আবহে শবিনার বৈঠকে বসে তৃণমূলের নবগঠিত শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। নয়া কমিটির এটাই প্রথম বৈঠক। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিটির সদস্য হলেও গতকালকের বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, বৈঠকে কুণাল ঘোষ ও সৌগত রায়ের কিছু মন্তব্য নিয়ে জমা পড়া অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। এই আবহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলের সুপ্রিমোই।
জানা গিয়েছে বৈঠকে কমিটির সম্মুখে নিজের বক্তব্য পেশ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি পার্থবাবুকে বিঁধে বারংবার মন্তব্য পেশ করেছেন দলীয় মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এদিকে পরপর নারী ধর্ষণের ঘটনাকে রাজ্যের জন্য ‘লজ্জা’ আখ্যা দিয়ে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌদত রায়। তাঁকে নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে পার্থকে নিশানা করে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘এসব ঘটনা ব্রাত্য বসু জমানা ঘটেনি। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই যাবতীয় ব্যাখ্যা দিতে পারবে।’ এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়েকদিন আগেই জীবিত মনমোহন সিংয়ের ‘মৃত্যু’তে শোকপ্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফেলেছিলেন। সেই ঘটনাতেও পার্থবাবুর নাম না নিয়ে কুণাল ঘোষ তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। এই আবহে পার্থ-কুণাল দূরত্ব মেটাতে কুণালকে পার্থবাবুর বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। সেই মতো কুণাল পার্থবাবুর বাড়িতে গেলেও তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। পার্থবাবুর এক আত্মীয়ের মৃত্যুতে সেখানে শোকের পরিবেশ থাকায় কথা হয়নি বলে জানান কুণাল ঘোষ।
এদিকে এর আগে গত বৃহস্পতিবার সৌগত রায় বলেন, 'রাজ্যে মহিলা নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে সকলেই চিন্তিত। এখানে একদম জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। কখনও কোনও ঘটনা ঘটলে, কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। যে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর নেতৃত্বে একটা ঘটনাও যদি ঘটে, তবে সেটা আমাদের সকলের পক্ষে খুব লজ্জার হবে। আমি আশা করব, পুলিস-প্রশাসন সেদিকে নজর দেবে।' এই মন্তব্যের পর বেশ অস্বস্তিতেই পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দল পরিস্থিতিকে ‘স্বাভাবিক’ দেখাতে চাইলেও সাংসদের কথার সুর তাতে মেলেনি। সেই নিয়ে আলোচনা হয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে।