সাধু সেজে বয়ষ্ক মহিলাদের প্রতারণাচক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতরা উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতারণাচক্র চালাত তারা। বৃহস্পতিবার তাদের নগর দায়েরা আদালতে পেশ করা হয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে কলকাতা লাগোয়া কয়েকটি এলাকা থেকে বৃদ্ধাদের অভিনব কায়দায় প্রতারণার অভিযোগ আসছিল। প্রতারকরা সাধু সেজে বৃদ্ধাদের গয়না শোধনের নামে প্রকাশ্য রাস্তায় প্রতারণা করছিল। প্রতারিত মহিলারা জানিয়েছিলেন, প্রথমে এক সাধুবাবা এসে আশীর্বাদ করে বলতেন, তোমার পরিবারে বিপদ আছে। স্বামী বা ছেলের অকাল মৃত্যু হবে।
এতে ভয় পেয়ে যেতেন অনেক বৃদ্ধা। তারই মধ্যে আরও কয়েকজন যুবক এসে সাধুবাবার পা জড়িয়ে ধরে বলতেন, সাধু তাঁদের বিপদ তেকে বাঁচিয়েছেন। এতে ভীত বৃদ্ধার মনে ভক্তির সঞ্চার হত। তখন সাধুবাবা বলতেন, ভয় নেই। পরনের গয়না শোধন করলেই সব পাপ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। পরিবারকে বাঁচাতে সাধুবাবার হাতে পরনের গয়না তুলে দিতেন মহিলা। এর পর সাধুবাবা বলতেন, গয়না শোধনের প্রক্রিয়া দেখানো যাবে না। পিছন ফিরে দাঁড়ান। পিছন ফিরতেই চম্পট দিতেন সাধুবাবা ও তাঁর ভক্তরা।
তদন্তে নেমে লালবাজারের ওয়াচ সেকশনের গোয়েন্দারা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে থাকেন। এর পর অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে প্রথমে ২ জনকে গ্রেফতার করেন তাঁরা। তাদের জেরা করে গ্রেফতার করা হয় বাকিদের। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তারা উত্তরাখণ্ডের উধমসিং নগর জেলার বাসিন্দা। তারা দেশের বিভিন্ন শহরে এরকম ভাবে প্রতারণা করে বেড়ায়। প্রতারকরা ৪ জনের দল গড়ে অপারেশন চালায়। তাদের মধ্যে ১ জন সাধু সাজে। বাকিরা সাজে ভক্ত। এর পর ২টি মোটরসাইকেলে করে বেরিয়ে পড়ে তারা।
কোনও একটি জায়গায় পৌঁছে মোটরসাইকেল রেখে প্রথমে তারা শিকার চিহ্নিত করে। এর পর সাধুবেশী প্রতারক তাঁর দিকে এগিয়ে যায়। কথপোকথন এগোলেই বাকিরা এগিয়ে আসে। বৃদ্ধাদের সোনার গয়না হাতিয়ে নিজেদের ঠিকানায় ফিরে আসে। ধৃতরা কতজনকে এভাবে প্রতারণা করেছে। প্রতারণা করে পাওয়া গয়না কার কার কাছে বিক্রি করেছে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।