ইদানিং দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের অপহরণ হচ্ছে শহর কলকাতায়। আর তার তদন্তে নেমে পুলিশই হতবাক হচ্ছে। কারণ প্রত্যেকটি ঘটনার পিছনে কোনও না কোনওভাবে জড়িয়ে আছে পুলিশ। এমন তথ্য পাচ্ছেন খোদ পুলিশ কর্তারা। আর তাতেই মাথা ঘুরে যাচ্ছে। এবার আবার এক ঘটনার তদন্তে নেমে এমন প্রমাণ পেয়েছেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে এখন কলকাতা পুলিশ সদর দফতরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি তিলজলা এলাকার ব্যবসায়ী অপহরণ হয়েছিল। আর তার তদন্তে নেমে লালবাজারের আতসকাচে উঠে এল এক সাব–ইন্সপেক্টর।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? গত ২৮ জুলাই তিলজলা এলাকা থেকে অপহরণ করা হয় এক ব্যবসায়ীকে। এই ঘটনা সমস্ত সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, ওই এলাকার একটি রেস্তোরাঁর সামনে থেকে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তারপর ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করে তারা। এই আবহে তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপর দিঘা থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ দিঘা, নরেন্দ্রপুর এবং হাওড়ায় হানা দিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের সূত্রেই পুলিশের হাতে উঠে আসে এক সাব– ইন্সপেক্টরের নাম। তারপর ওই সাব–ইন্সপেক্টরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন তদন্তকারীরা বলে সূত্রের খবর।
আর কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনার তদন্তে নেমে বোঝা যাচ্ছিল নেপথ্যে কোনও মাথা আছে। যে কিনা পুলিশের ভিতরের খবর রাখে। তারপর ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন কিছু তথ্য সামনে আসে। তারপর অভিযুক্তরা ধরা পড়লে তাদের জেরা করা হয়। এমনকী প্রত্যেকের মোবাইলের কল রেকর্ড যাচাই করা হয়। তখনই এক সাব–ইন্সপেক্টরের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। ওই সাব–ইন্সপেক্টর রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সে কর্মরত। তাঁর নাম সামনে আসতেই লালবাজারের কর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়ে। তাই তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘অ্যান্টি কোরাপশন সেল’ খুলছেন রাজ্যপাল, নবান্ন–রাজভবন সংঘাতের নয়া মোড়
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ব্যবসায়ী অপহরণ বাড়ার কারণ টাকা আদায় করা। কিন্তু পুলিশের নাম জড়িয়ে গেলে মানুষ ভরসা করতে পারবে না। তাই কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। ২০২২ সালে মধ্য কলকাতায় তালতলায় এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তাঁর কাছ থেকে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা লুঠ করেছিল দুষ্কৃতীরা। তখন পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছিলেন, যখন ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী তখন পথ আটকে দাঁড়ায় কয়েকজন। এরপর ওই ব্য়বসায়ীকে নিজেদের গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়। তারপর টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে। ওই ঘটনায় তিনজন পুলিশ কর্মী গ্রেফতার হয়েছিল।