আগামী ৮ জুলাই রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আবাস যোজনা নিয়ে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। আবাস যোজনা প্রকল্পে বাংলার সাত লক্ষের বেশি উপভোক্তার পিএফএমএস পোর্টালের মাধ্যমে আধার যাচাই করার কাজ কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সমস্যা নজরে আসায় কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখেছে নবান্ন বলে সূত্রের খবর।
কেন্দ্রীয় সরকার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আবাস যোজনা প্রকল্পে আধার যাচাই–পর্ব প্রক্রিয়াকে জনগণের সুবিধা পাওয়ার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন হিসাবে ধরা হবে। সুতরাং নথিভুক্ত উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির টাকা ঢুকবে। কিন্তু এই কাজ ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাই এখন জনগণ বাড়ি তৈরির টাকা পাবেন না বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, আধার কার্ড যাচাই পর্বের টালবাহানার কোনও কারণ জানাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আর এভাবেই রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য না দেওয়ার নতুন কৌশল তৈরি করা হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া নিয়ে আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন নিয়ম চালু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার বলে সূত্রের খবর। সেখানে একবার যাচাই করা হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার সংযোগ আছে কিনা। আবার যাচাই করা হবে অর্থমন্ত্রকের পিএফএমএস পোর্টালের মাধ্যমে। এই দুটি ধাপ যাঁরা পার করতে পারবেন তাঁদেরই টাকা পাঠানো হবে অ্যাকাউন্টে। কিন্তু এই কাজের গড়িমসির ফলে একমাত্র বাংলাতেই এত সংখ্যক উপভোক্তার আধার কার্ড যাচাই করা বাকি। এই কাজ সবচেয়ে ভাল হয়েছে গুজরাটে। তাই আবার বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে অভিযোগ উঠছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? আবাস প্লাস প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে ১১ লক্ষ ১ হাজার ৯৫৫ জনের নাম। এই উপভোক্তাদের প্রাপ্য মোট ৮ হাজার কোটি টাকা এখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। আবার আগের আবাস সফ্ট প্রকল্পের ৬৩ হাজার ৮৩৫ জন উপভোক্তার দুই কিস্তির টাকা এখনও বাকি রয়েছে বলে অভিযোগ। এঁদের মধ্যে মাত্র ৩.১৬ লক্ষ উপভোক্তার পিএফএমএস যাচাই সম্পূর্ণ করেছে কেন্দ্র। ১ জুলাই আবাস প্লাসের টাকা কেন্দ্র ছাড়লেও আধার যাচাই–পর্ব বাকি থাকলে টাকা কেউ পাবে না। এই সমস্যা এড়াতে নবান্নের পক্ষ থেকে গত ১২ জুন অর্থমন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর সেখানে বলা হয়েছে, আধার যাচাইয়ের কাজ অগ্রাধিকারের সঙ্গে শেষ করতে। তাই উপভোক্তাদের টাকা পাওয়া নিয়ে নতুন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।