প্রাথমিক নিয়োগের তদন্তে নেমে এবার ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজ পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। আজ, শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে মুখবন্ধ খামে সেই রিপোর্ট জমা দেন ইডি’র আইনজীবী। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা বাংলা সিনেমা এবং স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তিতেও বিনিয়োগ করা হয়েছে বলেই ইডির রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১২৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি এবং নগদ অ্যাটাচ করা হয়েছে। আর এই বিপুল পরিমাণ টাকার কথা বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে জানান তাঁরা।
এদিকে যাঁরা টাকা দিয়ে অবৈধ পথে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের নামের তালিকা জমা দিতে বললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই মামলায় দুই তদন্তকারী সংস্থা ইডি–সিবিআইকে আগামী ২৯ অগস্টের মধ্যে তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। সুতরাং বড় সময় পেয়ে গেল তদন্তকারী সংস্থা। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয়েছে। সেখানে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই নিয়েও নানা অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যেই অবৈধ উপায়ে পাওয়া চাকরি প্রাপকদের নামের তালিকা চেয়ে বসলেন বিচারপতি। সেক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরের উপর চাপ বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সিবিআইয়ের সই করা রিপোর্টে কুন্তলের করা অভিযোগকে আজ ভিত্তিহীন বলে জানানো হল কলকাতা হাইকোর্টে। কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলতে বলা হচ্ছে। এবার মুখবন্ধ করা খামে সিবিআই কুন্তল ঘোষের অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট জমা দিল। এই নিয়ে সিট গঠন করা হয়েছিল। আজ সেই সিটের রিপোর্ট জমা পড়ল। সিটের কর্তাদের দাবি, গোটা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর সংশোধনাগারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলে সিবিআই। নিয়ম হল, ১৮০ দিনের সিসিটিভি ফুটেজ যেখানে থাকার কথা সেখানে সাতদিনের বেশি ফুটেজ মেলেনি।
আরও পড়ুন: বাঙালির জন্য বড় সুখবর নিয়ে এল দিঘা মোহনা, টন টন ইলিশ উঠে আসছে শহরে
এছাড়া ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা ইডিকে প্রশ্ন করেন। বিচারপতি সিনহা জানতে চান, ‘এত টাকার যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে আপনারা এখনও এই দুর্নীতির মাথা কে খুঁজে পাচ্ছেন না?’ তারপরই তিনি তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। আর প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় চাকরি পাওয়া ৪২,৯৪৯ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তার আগে এই মামলায় ৩২০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে এজলাস বদল হয়ে মামলা ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। তবে বিচারপতি সিনহা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল রাখেন। তারপরে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে চাকরি হারানো শিক্ষকদের।