সিবিআই অনুসন্ধান ছাড়া কোনও উপায় নেই। স্কুলে গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগ মামলায় এমনই বলল কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়া হতে পারে।
সোমবার নিয়োগ মামলার শুনানিতে রাজ্যের সওয়ালের প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কড়া ভাষায় জানান, রাজ্যের যে বক্তব্য আছে, তা বলার জন্য পাঁচ মিনিট আছে। হলফনামা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে উপযুক্ত নিয়ম মেনে নিয়োগ করা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে সিবিআই অনুসন্ধান ছাড়া কোনও উপায় নেই।
যদিও রাজ্যের তরফে সিবিআই অনুসন্ধান বিরোধিতা করা হয়। রাজ্য পুলিশের তরফে ভরসা করার আর্জি জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)। তিনি দাবি করেন, রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে এমন কোনও অভিযোগ নেই যে ঠিকভাবে তদন্ত করা হয়নি। কিন্তু একটি পর্যায়ের পর সিবিআই তদন্ত থেমে যায়। প্রয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্তের আর্জি জানানো হয়। সেই আর্জি অবশ্য খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। কী কারণে রাজ্যের আর্জি মেনে নেওয়া হচ্ছে না, সেই ব্যাখ্যাও দেন বিচারপতি। তিনি জানান, এই নিয়োগ মামলায় রাজ্য জড়িত আছে। তাই রাজ্যের কোনও সংস্থাকে তদন্তের ভার দেওয়া হবে না। সেক্ষেত্রে সিবিআইকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের যে সুপারিশ করেছিল রাজ্য সরকার, তাতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের পর প্যানেল তৈরি করে দেয় কমিশন। অভিযোগ ওঠে, ২০১৯ সালে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। ২৫ জনকে নিয়োগের বিষয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা হয় মামলা। সেই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার কমিশনের সচিবকে তলব করেছিল হাইকোর্ট। সেইমতো গত বুধবার হাইকোর্টে হাজিরা দিতে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েন কমিশনের সচিব। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, দুপুর তিনটের মধ্যে কমিশনকে আদালতে যাবতীয় তথ্য পেশ করতে হবে। দেওয়া হবে না কোনও বাড়তি সময়। যদি সেটা না হয়, তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সিআইএসএফ অফিস ঘিরে থাকবে। তারইমধ্যে সেই মামলায় ৫০০ জনের নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়।