সদ্য নয়াদিল্লিতে গিয়ে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। এবার বিজেপি সম্পর্কে মুখ খুললেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে বিজেপি সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বাবুল। যা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমনকী বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে। কারণ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি তাঁর সঙ্গে বেইমানি করেছে। বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আর বহিরাগতদের চাটার্ড বিমানে চড়িয়েছে। তবে তিনি বিজেপি ছেড়ে গর্বিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে প্রশংসা করেন বাবুল।
এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে। সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, বিজেপি বাংলার জন্য ভাবে না। বাংলার জন্য কিছু করবেও না। এবার অবশ্য ফেসবুক পোস্টে নিজের ভিজিটিং কার্ডের একটি ছবি পোস্ট করেছেন বাবুল সুপ্রিয়। আর সেই কার্ডে সাংসদ পদের পাশে প্রাক্তন কথাটি লিখে দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ছোটবেলায় শুনেছিলাম, যদি নিজের মন ও হৃদয় বলে কেউ অন্যায়ভাবে তোমাকে ১০ টাকা জরিমানা দিয়েছে তাহলে জরিমানাটা না দিয়ে আদালতে লড়াই করো। দরকার হলে ১০০ টাকা খরচ করে সেই জরিমানা প্রত্যাহার করাও। অন্যায়ভাবে করা জরিমানা কখনওই মেনে নেবে না। মেনে নিইনি আর তাই আড়াই বছর বাকি থাকা সত্ত্বেও বিজেপির হয়ে জেতা সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে একটুও দ্বিধা করিনি।’ বাবুলের এই ফেসবুক পোস্টে বিজেপি বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে।
এই ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘১৯৯২ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের নিরাপদ চাকরি ছেড়ে মুম্বই যাওয়ার সময়ও আমি ভয় পাইনি। আজও পাই না। বিজেপি থেকে যাঁরা আমাকে নৈতিকতার জ্ঞান দিচ্ছেন তাঁকে বলবো, নিজের বাড়ির অন্দর থেকে পাঠটা শুরু করতে। আর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে আমি যা করতে পেরেছি তা আগে করে দেখাতে। তারপর যা বলার বলতে।’ এই মন্তব্যের নিশানা যে শুভেন্দু অধিকারী তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। কারণ কয়েকদিন আগেই বাবুল বলেছিলেন, নিজের ভাই–বাবাকে গিয়ে জ্ঞান দিক শুভেন্দু।
আর আজ ফেসবুক পোস্টে বাবুলের কটাক্ষ, ‘কাঁকড়ায় ভরা একটি দল। যারা নিজেদের প্রকৃত কর্মীদের সঙ্গে নির্লজ্জ বিশ্বাসঘাতকতা বেইমানি করে। আর বহিরাগতদের চার্টার্ড প্লেনে চড়ায়। সেই বিজেপির জন্য ২০১৪ সাল থেকে যেটুকু করেছি তাতেও আমি যেমন গর্বিত, আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আড়াই বছর বাকি থাকতেও বিজেপির টিকিটে জেতা সাংসদ পদ ছেড়ে দিতে পেরেও আমি সমান গর্বিত।’
এখানেই শেষ নয়, আসানসোলের নাগরিকদের জন্য বাবুল সুপ্রিয় লেখেন, ‘আপনারা বিজেপির ধান্দাবাজগুলির কথায় কান দেবেন না। রাজনীতিতেও ঢুকবেন না। আমি আপনাদের ছিলাম, আছি, থাকব। আগামীদিনে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, যিনি অত্যন্ত স্নেহের সঙ্গে আমাকে সব ভুলে শুধুমাত্র বাংলার মানুষের কাজ মন দিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ করে আবার পাবলিক সার্ভিসে ফিরিয়ে এনেছেন, তাঁর নেতৃত্বে আরও অনেক কাজ করে দেখাব। আপনারা আমার জন্য সবসময়েই বিশেষ ছিলেন ও থাকবেন। আপনাদের জন্য সবসময়েই কিছু না কিছু একস্ট্রা করার চেষ্টা করব।’
বিজেপির অস্বস্তি যে বেড়েছে তা জিতেন্দ্র তিওয়ারির মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়াটা যদি জরিমানা হয় তাহলে বিনা পরিশ্রমে রামদেব বাবার সুপারিশে এবং মোদীজীর জনপ্রিয়তায় সাংসদ হওয়াটা, লটারিতে প্রাইজ পাওয়ার মতো নয় কি?’ আসলে বাবুল এইসব নেতার নাম না করে ধান্দাবাজ বলেছেন। তাই পাল্টা দিলেন জিতেন্দ্র বলে মনে করা হচ্ছে।