সুব্রত বক্সি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি। শেষ কবে তিনি জেলা সফরে গিয়েছেন তা দলের অনেকেই মনে করতে পারবেন না। কিন্তু এখন লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। তাই আজ, শুক্রবার জেলা সফরে গিয়েছেন সুব্রত বক্সি। তাঁর এই জেলা সফরে হই হই কাণ্ড পড়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। কারণ ১০ মার্চ ব্রিগেডে জনগর্জন সভার ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তার জন্য প্রত্যেক জেলায় সংগঠনের প্রস্তুতি বৈঠক শুরু হয়েছে। সুব্রত বক্সি আজ পূর্ব মেদিনীপুরে সাংগঠনিক বৈঠক করতে গিয়েছেন। আর সেই বৈঠকে ডাকা হয়নি জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে।
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসায় জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ গতকাল বিস্ফোরক পোস্ট এক্স হ্যান্ডেলে করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তারপর আজ সকাল থেকে ফোন সুইচ অফ। নিজের এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো বদল করেছেন তিনি। মুছে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্রের পদ। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন পদক্ষেপে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কুণাল ঘোষ তমলুক, কাঁথিতে সংগঠন দেখভাল করছেন। তাঁকে বারবার নন্দীগ্রামে যেতে দেখা গিয়েছে। আর এখানে এসে বেশ চাপে রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। সেখানে সাংগঠনিক বৈঠকে ডাকই পেলেন না কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সভায় রেকর্ড জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা, দায়িত্বে বিডিও অভিযোগ বিজেপির
অন্যদিকে এমন সব ঘটনা যখন ঘটছে তখন আজ কুণাল ঘোষ ছেড়ে দিলেন রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা। এতে আরও গুঞ্জন বাড়ছে। কুণাল কি নতুন কোনও পদক্ষেপ করবেন? উঠছে প্রশ্ন। গতকাল এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর। সারাবছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক এবং দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার চলতে পারে না।’ সুতরাং ক্ষোভ বা রাগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর নয়। এটা স্পষ্ট হচ্ছে কুণালের লেখা থেকে। তাহলে যাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ তার জন্য সব ছেড়ে নির্বাসনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কেন?
দলের উচ্চপর্যায়ে সে কথা বললেই তো হতো। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে বিরোধীরা অক্সিজেন পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবার প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করার সময় ইস্যু সামনে আসে নবীন–প্রবীণের। তখন সুব্রত বক্সির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁকে তুলোধনা করেন কুণাল ঘোষ। তখন থেকে সম্পর্কে চিড় ধরে যায়। এবার সেটা চরমে উঠেছে। কিন্তু কুণাল ঘোষের ক্ষোভ ঠিক কোন নেতার উপর সেটা এখনও খোলসা হয়নি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবটা সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।