শপথগ্রহণের দিন থেকেই নবান্ন–রাজভবন সংঘাত সামনে এসেছিল। এবার নির্বাচনের পর বাংলার পরিস্থিতি অশান্ত বলে অসমে গিয়ে অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আর তাতে বেজায় চটেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই ফের রাজ্যপাল পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের অপসারণ চাইল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসায় ইন্ধন জোগাচ্ছেন রাজ্যপাল। তিনি আর রাজ্যপাল পদে থাকার যোগ্য নন।
ঠিক কী বলেছেন রাজ্যপাল? শুক্রবার অসমে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল বলেন, ‘২ মে’র পর রাজ্যের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন মানুষ। কারণ একটাই, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অভাব। ভেবেছিলাম সরকারের বোধদয় হবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। রাজ্যের প্রথম সেবক হিসেবে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে অশান্ত এলাকায় যাওয়ার। আমার প্রথম কাজ সংবিধানকে রক্ষা করা। তার পরে বাংলার মানুষকে হিংসা থেকে বাঁচানো।’
এই নিয়ে সরব রাজ্যের শাসকদল। তাঁদের দাবি, বেছে বেছে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন তা নিয়ে মাথাব্যাথা তাঁর নেই। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যপালের অপসারণ চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘দিল্লির শাহেনশাদের এজেন্ট ধনখড়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হিংসায় ইন্ধন দিচ্ছেন। বিজেপি নেতার মতো কাজ করছেন। তিনি রাজ্যপালের পদে থাকার যোগ্যই নন। তাঁকে অপসারণ করা উচিত।’
এদিন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ আরও বলেন, ‘যখন ৯ মে’র পরে বাংলার হিংসা দমন করা গিয়েছে। রাজ্য সরকারের ভূমিকায় কলকাতা হাইকোর্টও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তখন রাজভবনে বসে থাকা দিল্লির এজেন্টটি শীতলকুচির মতো জায়গায় গিয়ে হিংসায় ইন্ধন জোগাচ্ছেন। ওখানে যে চারজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মারা গিয়েছেন তাঁদের পারিবারের সঙ্গে উনি দেখা করেননি। বিজেপি গুন্ডাদের আক্রমণে দু’জন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুন হন। তাদের পরিবারের সঙ্গেও উনি দেখা করেননি। একজন কুখ্যাত সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর ওসিকে ধমকাচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়রা।