যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার পরেই নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। হস্টেলে সিসিটিভি না থাকায় মানবাধিকার কমিশনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে। তার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করতে সিসিটিভি বসানোর দাবি উঠেছে। তাতে সহমত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ। কিন্তু রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিযুক্ত নয়া উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ সিসিটিভি বসানোর পক্ষে নন। তাঁর মতে, সিসিটিভি বসিয়ে কোনও লাভ নেই। তাঁর এই মন্তব্যের পরে নতুন করে তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বপ্নের যাদবপুর যেন বিভাষিকা! পুরনো কলেজে ফিরলেন পড়ুয়া, ছাড়তে মরিয়া আরও ১ জন
পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর দাবি উঠেছে। তা সত্ত্বেও কেন সিসিটিভি বসানোর বিরোধিতা করছেন নয়া উপাচার্য? তাহলে কি তিনি পক্ষান্তরে র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন, অথবা র্যাগিংকেই তিনি সমর্থন করছেন? তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও উপাচার্যের দাবি, সিসিটিভি বসিয়ে লাভ হবে না। এমন কাজ করতে হবে যাতে সুস্থমানের চিন্তা বজায় থাকে। উল্লেখ্য, বিজেপি পন্থী হিসেবে পরিচিত নয়া উপাচার্য। এর আগে ঠিক একইভাবে সিপিএম যুব নেতা শতরূপ ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন, সিসিটিভি বসিয়ে লাভ নেই। আর এবার খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই ধরনের মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এর নিন্দা করেছে তৃণমূল।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, বিজেপির লোককে রাজ্যপাল উপাচার্য করেছেন। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে গিয়ে সমস্যা হয়। এরজন্য নিরপেক্ষ লোককে দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। অন্যদিকে, যাদবপুর কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন। কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় র্যাগিং মোটেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কী পদক্ষেপ করেছে ইউজিসি তা জানতে চেয়েছে।’ পালটা বিজেপি শাসিত রাজ্যে র্যাগিংয়ের ঘটনা বেশি ঘটে বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সারা দেশে ৫১১ জন র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। মূলত সেই সমস্ত ঘটনা ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সময় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল তখন কোনও উপাচার্য ছিল না। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু সিসিটিভি বসানোর কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পরে সিসিটিভি নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন উপাচার্য। তাঁর মতে, সিসিটিভি না লাগিয়ে কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে সেগুলি খুঁজে বার করতে হবে সেই মতো পদক্ষেপ করতে হবে তাহলে নিরাপত্তা বজায় থাকবে।