ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে রোগের প্রকোপ বাড়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে ঘরে ফিরেছেন বাংলার ২০০ পরিযায়ী শ্রমিক। আর তার পরেই উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর আগে একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল বিহার, ওডিশা, উত্তর প্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডে, যেখান থেকে বেশি সংখ্যক শ্রমিক কর্মসূত্রে কর্নাটক, গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও পঞ্জাবের মতো বর্ধিষ্ণু রাজ্যগুলিতে রোজগারের কারণে পাড়ি দিয়েছেন।
পশ্তিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ৩ দিনে হাওড়া জেলার ৭৬ জন, মালদা জেলার ৬৭ জন, হুগলি জেলার ৪৬ জন এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার ৩০ জন গ্রামীণ বাসিন্দার মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ ছাড়া বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গ্রামাঞ্চল থেকেও প্রচুর পরিমাণে আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্ত সকলেই ভিনরাজ্য থেকে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক, জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক।
এ পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছে ১২টির বেশি ট্রেন। পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়াও যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ছাত্র ও পর্যটকরা। তবে এর পরে ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে বাংলায় ২০ থেকে ২৬ মে কোনও ট্রেন ঢোকেনি।
আমফানের কারণে বেসামাল রাজ্যে এই মুহূর্তে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন না পাঠানোর জন্য রেল বোর্ডের কাছে আবেদন জানিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে দুর্যোগের পরে এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ারল পরে ফের মহারাষ্ট্র থেকে শ্রমিকদের নিয়ে স্পেশ্যাল ট্রেন পৌঁছানোর কথা রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে কোন শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন যাওয়ার খবর নেই।
রাজ্য প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন না পাঠানোর জন্য রেল মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত কলকাতা,হাও়ড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নগরাঞ্চলের বাইরে উল্লেখযোগ্য হারে ছড়িয়ে পড়েনি করোনা সংক্রমণ। রাজ্যের ৩টি জেলা খনও পর্যন্ত গ্রিন বা সবুজ জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সমস্ত অঞ্চলে কোনও করোনা পজিটিভ রোগীর সন্ধান এখনও মেলেনি।
এ দিকে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি করে রাজ্যে রাজনৈতিক তরজায় মেতে উঠেছে বিরোধী দল বিজেপি। বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগেসের বিরুদ্ধে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতির অভাবের অভিযোগ এনেছে গেরুয়া শিবির।