বাড়ির পরিচারক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও ঘরবন্দি না থেকে দফতরে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর বিরুদ্ধে। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় মন্ত্রীর নমুনাও করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে।
জানা গিয়েছে, ৪ দিন আগে মন্ত্রীর বাড়ির এক পরিচারক করোনা পজিটিভ প্রমাণিত হন। নিয়ম অনুযায়ী, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কিন্তু সেই নিয়ম না মেনে গত বুধবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দমকল কর্মীকে শ্রদ্ধা জানাতে সদলবলে বালি দমকল কেন্দ্রে উপস্থিত হন সুজিত বসু। তাঁর আসার খবর পেয়ে দমকল অফিসে ভিড় করেন বহু মানুষ। মন্ত্রীও এবার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, সুজিত বসু এবং তাঁর স্ত্রী করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। তবে আপাতত সংক্রমণের শিকার হননি ওই বাড়ির বাসিন্দা তাঁদের সন্তানরা। বাড়িতে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরেও বাইরে বেরোনোর যুক্তি দিতে গিয়ে সুজীতবাবুর দাবি, তাঁর চোদ্দো জন দেহরক্ষীকে পরীক্ষা করা হলে তাঁদের সকলের রিপোর্ট নেডেটিভ পাওয়া যায়। শুধুমাত্র সস্ত্রীক মন্ত্রীই পজিটিভ প্রমাণিত হয়েছেন। আপাতত তাঁরা বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
রাজ্যের দমকলমন্ত্রীর করোনা আক্রান্ত হওয়া সম্পর্কে শুক্রবার নবান্নে মমতা বলেন, ‘যে কোনও মানুষের হতে পারে। দুর্যোগের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে সুজিতের করোনা হয়েছে। আমার এলাকাও তো করোনাকবলিত। আমি কী করব? আপনারা কি চান আমি বাড়িতে চুপ করে বসে থাকি? তা হলে তো কাজও হবে না। কেউ ক্যারিয়ার হলে কী করতে পারি?’
বুধবার বেলুড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় মারা যান দমকলকর্মী সুকান্ত সিংহ রায়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেই দিন বিকেলে সুজিতবাবু দমকলের ডিজি জগমোহন ও অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় আদিকারিকদের সঙ্গে বালি দমকল কেন্দ্রে পৌঁছন। দফতরে ওসি-র ঘরে মন্ত্রীর কাছে বসেছিলেন নিহত কর্মীর আত্মীয়রা। এ ছাড়া মন্ত্রীর আবির্ভাবের খবর পেয়ে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা ও কর্মীও উপস্থিত হন।
সুজিতবাবু আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পরে শুক্রবার বালি দমকল কেন্দ্র ও তার আশপাশ স্যানিটাইজ করা হয়েছে। দমকলের কোন কোন আধিকারিক ও কর্মী মন্ত্রীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, সেই তালিকাও করেছে দমকল বিভাগ।