যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। মেইন হস্টেলের বারান্দা থেকে তাঁর পড়ে যাওয়া ও মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে নানান। স্বপ্নদীপের পরিবারের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে এই মৃত্যুর সঙ্গে ব়্যাগিং জড়িত কি না! এদিকে, স্বপ্নদীপের মতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের আরও ছাত্র অর্পণ মাঝি ফেসবুকে তুলে ধরেছেন বিস্ফোরক দাবি। জুওলজির পড়ুয়া অর্পণ বলছেন ‘প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর পরের দু-তিন রাতেই হস্টেল আমার মধ্যে বিভীষিকার জন্ম দিয়েছে।’
নদিয়া থেকে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা স্বপ্নদীপের মৃত্যু বহু প্রশ্ন তুলছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরের ঘটনা নিয়ে। জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ হস্টেলের নিচে স্বপ্নদীপের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রশ্ন উঠছে, ওই ঘটনার আগে স্বপ্নদীপের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল? একরাশ ইচ্ছা, আকাঙ্খা বুকে নিয়ে শহরে পড়তে আসা নদিয়ার এই পড়ুয়ার মৃত্যু ঘটনায় রহস্য জাল বুনছে। এদিকে, ঘটনার পর অর্পণ মাঝি নিজের পোস্টে একাধিক ঘটনার দাবি করেছেন। তিনি লিখছেন,'সমাজের প্রতিটি স্তরে ক্ষমতা প্রদর্শন আছে, কিন্তু যাদবপুর মেইন হস্টেলের কিছু দাদা'ও যে এই একই কাজ করবে তা আমার কল্পনার অতীত। মাথায় একটি স্পেসিফিক ছাঁটের চুল কাটতে বলা, সন্ধ্যে ৬ টার মধ্যে হস্টেলে ঢুকতেই হবে, সিনিয়র দের ক্রমাগত ফাইফরমাশ খাটা, সারারাত জাগিয়ে রেখে ইন্ট্রো নেওয়া (শুনতে পারছি যে এখনও আসল ইন্ট্রো নেওয়াই হয়নি)। এগুলো ওই তিন রাত আমার সাথে চলছে, এবং আমি ভীত।'
অর্পণ তাঁর পোস্টে জানাচ্ছেন, তিনি আসানসোল থেকে এসেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি লিখছেন, তাঁর আর্থিক সমস্যা থাকলেও তাঁকে এখন মেস খুঁজতে হচ্ছে। নিজের পোস্টে অর্পণ এও লিখেছেন যে, 'যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে সব থেকে লড়াকু একটি বিশ্ববিদ্যালয়।' আর সেখানের হস্টেলের ভিতর কী ঘটেছে তাঁর সঙ্গে সেকথা জানাতে গিয়ে অর্পণ লিখছেন, ‘ আমি বিশ্বাস করি মেইন হস্টেলের বেশিরভাগ দাদাই এই লড়াকু ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু কিছু জনের জন্য আমি আমার সহপাঠীকে হারালাম।’ অর্পণ তাঁর পোস্টে নিজেকে স্বপ্নদীপের সহপাঠী বলে উল্লেখ করেছেন। লিখছেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে সব থেকে গণতান্ত্রিক লড়াকু একটি বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে প্রতিটি ছাত্রছাত্রী অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে, এরাই পথ দেখায়।' এরই সঙ্গে অর্পণের আক্ষেপ, কিন্তু সমাজের যে ক্ষমতা কাঠামো, সংখ্যা গুরু ধর্মের সংখ্যা লঘুদের উপর। পুরুষদের মহিলাদের উপর, আমাদের দেশের উঁচু জাতের নীচু জাতের প্রতি। ক্ষমতাবান সিনিয়রদের (ইউনিয়ন লীডারদের মদতপুষ্ট) জুনিয়র দের প্রতি।এর ব্যাতিক্রম আমার অভিজ্ঞতা হলো না।’