স্কুল শিক্ষার জন্য ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক (এনসিএফ) এর উপর ভিত্তি করে, ২০২৪-২৫ সালে তৃতীয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য নতুন বই প্রথম প্রকাশিত হবে। এনসিইআরটি ডিরেক্টর প্রফেসর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি জানিয়েছেন যে নতুন বইয়ের পাশাপাশি ব্রিজ কোর্সও তৈরি করা হচ্ছে এবং এর জন্য বিভিন্ন বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরানো প্যাটার্ন থেকে সরে এসে এখন নতুন সিলেবাস পড়ানো হবে। এবং ২০২৫-২৬ সালের মধ্যেই সমস্ত শ্রেণির জন্য নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুত করা হবে।
প্রফেসর ড. সাকলানি বলেছেন যে গত বছর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে, দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে আসা হয়েছিল এবং এই বছর তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠা শিশুরা শুধুমাত্র নতুন পাঠ্যক্রমের উপর ভিত্তি করে নতুন পাঠ্যপুস্তক পাবে। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-এর অধীনে, দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুরা ইতিমধ্যেই নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে জারি করা বই থেকে পড়াশোনা করেছে, তাই তৃতীয় শ্রেণিতে উঠে শিশুরা নতুন সিলেবাসে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়বে না। একই সঙ্গে এ বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীরারাও নতুন বই পাবে। পঞ্চম শ্রেণিতে পুরানো সিলেবাস ও প্যাটার্ন পড়ে আসায়, এই শ্রেণির পড়ুয়াদের কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।
শিক্ষকদের প্রথমে ব্রিজ কোর্সের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে
তবে, যাতে পুরনো প্যাটার্ন থেকে নতুন প্যাটার্নে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় পড়ুয়াদের কোনও সমস্যা না হয়, এই বিবেচনায়, সিলেবাসের সমস্ত বিষয়ের জন্য সিলেবাস ব্রিজ কোর্স ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণি, যারা মূলত এই ব্রিজ কোর্সের জন্য অধীনে পড়বে। সাকলানি বলেছেন যে ব্রিজ কোর্সের জন্য প্রথমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তারপরে বাচ্চাদের নতুন সিলেবাস এবং প্যাটার্ন সম্পর্কে বিস্তারিত বোঝানো হবে। ব্রিজ কোর্সের প্রস্তুতিতে হিন্দি, সংস্কৃত, ইংরেজি, উর্দু, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, গণিত, শিল্প শিক্ষা, স্বাস্থ্য-শারীরিক শিক্ষা, বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিষয়ের জন্যও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এনসিইআরটি আরও বলছে, নতুন বই তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।
এছাড়াও এনসিআরটি পুরনো প্যাটার্ন থেকে নতুন সিলেবাসে স্যুইচ করার জন্য একটি পাঠ্যক্রমিক রূপান্তরও পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ব্রিজ কোর্স করার সময়, কমিটি দেখবে ক্লাস ফাইভ এর পুরনো এবং নতুন সিলেবাসের মধ্যে পার্থক্য কী রয়েছে, পদ্ধতির পার্থক্য কী রয়েছে, বিষয়বস্তুর পার্থক্য কী রয়েছে। এবং সেই সমস্ত পার্থক্য সম্পর্কে বোঝা, পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জন্য কতটা চাপের। কীভাবে শিশু এবং শিক্ষককে পুরনো প্যাটার্ন থেকে নতুন প্যাটার্নে নিয়ে যেতে হবে, সবটাই বিবেচনা করবে। শিক্ষকদের এ প্রসঙ্গে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে শিক্ষক পড়ুয়াকে বুঝিয়ে বলতে পারেন। এটি এক মাসের কোর্স হবে। একজন শিক্ষার্থী যখন অষ্টম থেকে নবম পর্যন্ত শ্রেণিতে উঠতে তখন তাকে নবম শ্রেণির জন্য ব্রিজ কোর্স করতে হবে। দশম থেকে একাদশে গেলেও একইভাবে ব্রিজ কোর্স করতে হবে।
- অভিনব পদ্ধতিতে শেখানো হবে
কাউন্সিলের তৈরি নির্দেশিকা অনুসারে, তৃতীয় শ্রেণির জন্য দুই সপ্তাহের ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম চালু করা হবে, ক্লাস ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য এক মাসব্যাপী ব্রিজ প্রোগ্রামের প্রস্তাব করা হয়েছে। এনসিএফ-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, নির্দেশিকাগুলি এমন অভিনব শিক্ষাগত পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছে, যেখানে ম্যাজিক, পাজল এবং গেম ব্যবহার করে গণিত শেখানো হবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য প্রকল্প-ভিত্তিক শিক্ষা দেওয়া হবে। শারীরিক শিক্ষার জন্য আঞ্চলিক গেমগুলি খেলতে দেওয়া হবে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনার মাধ্যমে বিজ্ঞান শেখানো হবে। এছাড়াও মডেল তৈরি করা, এবং ফিল্ড ট্রিপ করেও নতুন বিষয়ে শিক্ষা পাবেন পড়ুয়ারা।