জয়ের হ্যাটট্রিক দিয়ে আইপিএল ২০২৪ অভিযান শুরু করা কলকাতা নাইট রাইডার্সকে লিগ পর্বের মাঝপথে অত্যন্ত জমাট দেখাচ্ছে। প্রথম ৭টি লিগ ম্যাচের মধ্যে ৫টিতে জয় তুলে নিয়েছে কেকেআর। হেরেছে ২টি ম্যাচ। যদিও রাজস্থানের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ভালো খেলেও অল্পের জন্য হারতে হয় কেকেআরকে। সেই অর্থে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচেই যা কলকাতাকে রংচটা দেখিয়েছে। আপাতত নিজেদের অর্ধেক লিগ অভিযান শেষে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেকেআরের সার্বিক পারফর্ম্যান্সের বিশ্লেষণে চোখ রাখা যাক।
কেকেআরের প্রথম ৭ ম্যাচের ফলাফল:-
১. ইডেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৪ রানে হারিয়ে দেয়।
২. চিন্নাস্বামীতে আরসিবিকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে।
৩. ভাইজ্যাগে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১০৬ রানে পরাজিত করে।
৪. চিপকে সিএসকের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায়।
৫. ইডেনে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দেয়।
৬. ইডেনে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে ২ উইকেটে হেরে যায়।
৭. ইডেনে আরসিবিকে ১ রানে হারিয়ে দেয়।
প্রথম ৭ ম্যাচে কেকেআরের সেরা পাঁচ ব্যাটার:-
১. সুনীল নারিন ৭টি ইনিংসে ২৮৬ রান করেছেন।
২. ফিল সল্ট ৭টি ইনিংসে ২৪৯ রান করেছেন।
৩. শ্রেয়স আইয়ার ৭টি ইনিংসে ১৯০ রান করেছেন।
৪. আন্দ্রে রাসেল ৫টি ইনিংসে ১৫৫ রান করেছেন।
৫. অংকৃষ রঘুবংশী ৫টি ইনিংসে ১১৮ রান করেছেন।
প্রথম ৭ ম্যাচে কেকেআরের সেরা পাঁচ বোলার:-
১. হর্ষিত রানা ৫টি ইনিংসে ৯টি উইকেট নিয়েছেন।
২. আন্দ্রে রাসেল ৭টি ইনিংসে ৯টি উইকেট নিয়েছেন।
৩. সুনীল নারিন ৭টি ইনিংসে ৯টি উইকেট নিয়েছেন।
৪. বরুণ চক্রবর্তী ৭টি ইনিংসে ৮টি উইকেট নিয়েছেন।
৫. বৈভব আরোরা ৪টি ইনিংসে ৭টি উইকেট নিয়েছেন।
প্রথম ৭ ম্যাচে কেকেআরের সাফল্যের ৫ কারণ:-
১. সুনীল নারিনকে ওপেনে ফেরানো ছিল কেকেআরের মস্টারস্ট্রোক। নারিনের ব্যাটিং তাণ্ডব কেকেআরের সাফল্যের প্রধান কারণ।
২. রহমানউল্লাহ গুরবাজের বদলে ফিল সল্টের উপরে আস্থা রাখার সুফল পাচ্ছে নাইট রাইডার্স। গুরবাজ পরীক্ষিত। সল্ট সেক্ষেত্রে পরিবর্ত ক্রিকেটার হিসেবে দলে যোগ দিয়েছেন। তাই মনে করা হচ্ছিল বুঝি গুরবাজ প্রাধান্য পাবেন দলে। বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন ছবি।
৩. আন্দ্রে রাসেলকে এবার সেরা ছন্দে দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকটি মরশুমে চোট সমস্যায় ভুগতে দেখা গিয়েছে রাসেলকে। এবার তাঁকে প্রয়োজন মতো বুঝেশুনে কাজে লাগাচ্ছে কেকেআর। ব্যাটে-বলে দলের পারফর্ম্যান্সের সমান অবদান রাখছেন দ্রে রাস।
৪. অংকৃষ রঘুবংশী ও রমনদীপ সিং সংক্ষিপ্ত সুযোগেই দলের পারফর্ম্যান্সে ইতিবাচক অবদান রাখছেন। যার ফলেই নীতীশ রানার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না কেকেআর।
৫. হর্ষিত রানা ও বৈভব আরোরা, দুই ভারতীয় পেসার নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে নিচ্ছেন। বৈভবকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাফল্য পাচ্ছে কলকাতা।
কেকেআরের দুশ্চিন্তার জায়গা:-
১. ঘরের মাঠে বড় রানের ইনিংস গড়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না কেকেআর। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলিতে রাশ আলগা করার প্রবণতা চোখে পড়ছে নাইটদের মধ্যে।
২. মিচেল স্টার্ক দলের প্রধান পেসার হওয়া সত্ত্বেও যথেচ্ছ রান খরচ করছেন। ওভার প্রতি ১০-এর বেশি রান দিচ্ছেন রাসেলও। সুনীল নারিন ছাড়া কৃপণ বোলিং করতে পারছেন না কেউই।
৩. বেঙ্কটেই আইয়ার দলের অন্যতম প্রধান ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও সেই অর্থে ব্যাট হাতে এখনও নিস্প্রভ। তাঁকে বোলার হিসেবে ব্যবহার করারও সাহস পাচ্ছে না কেকেআর।