শেষ ওভারে বাকি ছিল ১৭ রান। আর শেষ বলে জয়ের জন্য দু'রান দরকার ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। কিন্তু শেষ বলে একচুলের জন্য রান-আউট হয়ে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন রিচা ঘোষ। যিনি কার্যত একাহাতে আরসিবিকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে আসেন। নিজের সবকিছু উজাড় করে দেন। সেই মরিয়া লড়াইয়ের পরও এক রানে হেরে গিয়ে ক্রিজেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বাংলার মেয়ে। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। উইমেন্স প্রিমিয়র লিগে (WPL) সেই রুদ্ধশ্বাস জয়ের মধ্যেও রিচাকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক মেগ ল্যানিং, জেমিমা রদ্রিগেজ, শেফালি বর্মা, শিখা পাণ্ডেরা। যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
যদিও প্রথমে ব্যাট করে আরসিবির সামনে যখন ১৮৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করেছিল দিল্লি, তখন একটা সময় মনে হয়েছিল যে জিতে যাবেন ল্যানিংরা। তবে এলিস পেরি এবং সোফি ডিভাইনের সুবাদে ম্যাচে টিকে থাকে আরসিবি। সেইসবের মধ্যে দিল্লির রক্তচাপ বাড়িয়ে দেন রিচা। শেষ ওভারে যখন ১৭ রান দরকার ছিল, তখন জেস জোনাসেনের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান। দ্বিতীয় বলে কোনও রান হয়নি। তৃতীয় বলে দু'রান নিতে গিয়ে আউট হয়ে যান দিশা কাসাত। কিন্তু আরসিবির জন্য ভালো ব্যাপার হয় যে স্ট্রাইকে ছিলেন রিচা।
আরও পড়ুন: IND vs ENG: আমাদের রোহিত শর্মা রয়েছে, বিশ্বের সেরা সিক্স হিটার- দ্রাবিড়ের মুখে হিটম্যানের স্তুতি
চতুর্থ বলে রিচা দু'রান নেন। পঞ্চম বলে বিশাল ছক্কা হাঁকান রিচা। সেইসঙ্গে ২৮ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন। অর্থাৎ শেষ বলে দু'রান বাকি ছিল। জোনাসেনের বলটা সোজা ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের দিকে ঠেলে দৌড়াতে থাকেন রিচা। নিজের স্নায়ু ধরে রেখে বলটা ছুড়ে দেন শেফালি। বলটা ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন জোনাসেন। মরিয়া চেষ্টা করেও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি রিচা। ডাইভ দিয়েও লাভ হয়নি। রান-আউট হয়ে যান। তার ফলে এক রানে হেরে যায় আরসিবি।
আর তারপর মাথা নীচু করে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিচা। হাঁটু মুড়ে মাথা নীচু করে কাঁদতে থাকেন বাংলার মেয়ে। নিজেদের জয় উচ্ছ্বাসের মধ্যেই তাঁকে সান্ত্বনা দিতে আসেন ল্যানিং, জেমিমারা। তিনটি ছক্কা এবং চারটি বাউন্ডারির সুবাদে ২৯ বলে ৫১ রান করে যে মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন, সেটার জন্য সান্ত্বনা দিতে থাকেন। এগিয়ে আসেন রিচার অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের অধিনায়ক শেফালিও। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে তাঁর প্রশংসা করেন আরসিবি অধিনায়ক স্মৃতি মন্ধানাও। ম্যাচের পরে তিনি বলেন, 'রিচাকে অনেকবার এরকমভাবে খেলতে দেখেছি আমরা। গতবারের উইমেন্স প্রিমিয়র লিগেও একই কাজ করেছিল। পেরি ভালো ব্যাটিং করছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ও রান-আউট হয়ে যায়। যেভাবে রিচা ব্যাট করেছে, স্নায়ু ধরে রেখেছে, সেটা প্রশংসনীয়। শেষ বলে যে কোনও দিকে ম্যাচটা যেতে পারত।'