শুরু হয়ে গিয়েছে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগ (ডব্লুপিএল)। উদ্বোধনী ম্যাচটি খেলা হয়েছে শুক্রবার অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারি। প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স মুখোমুখি হয় দিল্লি ক্যাপিটালসের। একটি হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচের সাক্ষী হয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত সকল দর্শকেরা। একেবারে শেষ বল পর্যন্ত চলে ম্যাচ। এখানেই শেষ নয়, শেষ বলে দরকার ছিল ৫ রান। ছক্কা হাকিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ন্সকে ম্যাচ জেতান সজীবন সাজানা এবং চার উইকেটে ম্যাচ পকেটে তুলে নেয় তারা।
তবে এদিন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই তরুণী অলরাউন্ডার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সকলের। খেলেছেন মাত্র একটি বল, কিন্তু তাতেই করে দেখিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতানোর পরই চোখের নিমেষে সেই মুহূর্তটি ভাইরাল হয়ে যায় চারিদিকে। রাতারাতি সকলের নয়নের মনি হয়ে ওঠেন সজীবন সাজানা। কিন্তু এই যুবতী ক্রিকেটারের সফর একেবারেই মসৃন ছিল না। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়ে এবং হাজার বাধা পেরিয়ে তবেই তিনি এই দিনটি দেখার সুযোগ পেয়েছেন।
১৯৯৫ সালের ৪ জানুয়ারি সাজানা জন্মগ্রহণ করেন কেরলের মানান্থাওয়ারিতে। তাঁর বাবা একজন রিক্সা চালক এবং আর্থিক চাপের মধ্যে দিয়েই কেটেছে জীবনের একটি বড় সময়। এছাড়াও জীবনের আরও কঠিন মুহূর্ত আসে যখন বন্যার জেরে তিনি সবকিছু হারিয়ে ফেলেন। চরম সংকটের মুখে পড়েন তিনি এবং তাঁর পরিবার। ক্রিকেট তো দূরের কথা, জীবন যাপন করবেন কি করে তার কোনও নিশ্চয়তা ছিল। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তাঁর ক্রিকেট জীবন শুরু হয় ২০১৯ সালে। কেরলের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে তিনি টোয়েন্টি-২০ সুপার লিগ খেলেছিলেন। এছাড়াও ২০২৩ সালে সিনিয়র উইমেন্স টি-২০ ট্রফি খেলেন। এই টুর্নামেন্টে তিনি ৭ ইনিংসে করেন ১৩৪ রান এবং নেন ৬টি উইকেট।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের হয়ে ডব্লুপিএলে অভিষেকের আগে সজীবন সাজানা কেরল, দক্ষিণাঞ্চল এবং ভারতীয় মহিলা এ দলের হয়েও ম্যাচ খেলেছেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের মিন্নু মান্নির পর তিনি কুরুচিয়া ট্রাইবের দ্বিতীয় ক্রিকেটার যিনি ডব্লুপিএল খেলেন। গতবছর নিলাম অনুষ্ঠানে কেরলের এই তারকা অলরাউন্ডারকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কেনেন ১৫ লক্ষ টাকায়। শুরুটা একেবারেই স্বপ্নের মতো হয়েছে তাঁর। এবার দেখার বিষয় আগামী ম্যাচগুলিতে তিনি কেমন পারফর্ম করে দেখান।
উল্লেখ্য, উইমেন্স প্রিমিয়র লিগের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে দিল্লি তোলে ৫ উইকেটে ১৭১। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে শেষ বলে মুম্বই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়। ম্যাচের সেরা হন হরমনপ্রীত কৌর। এবার দেখার বিষয় টুর্নামেন্টের পরবর্তী ম্যাচগুলিতে কেমন পারফর্ম করে দেখায় এই দুই দল।