ধর্মশালায় একেবারে কমলা ঝড়। ইংল্যান্ডের পর দক্ষিণ আফ্রিকা- বিশ্বকাপে লজ্জার মুখে পড়ল। আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় অঘটন ঘটাল নেদারল্য়ান্ডস। শ্রীলঙ্কার পর অস্ট্রেলিয়া- প্রাক্তন দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষেই নিজেদের ইতিহাসে স্মরণীয় জয় পেল নেদারল্যান্ডস। আর ধর্মশালায় ডাচদের রূপকথার নায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।
ডাচদের টপ অর্ডার পুরো ব্যর্থ হয়। প্রথম ছয় ব্যাটার রান পাননি। সাত নম্বরে নেমে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন ডাচ অধিনায়ক। ১১২ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। মনে হয়েছিল, দু'শোর ধারেকাছেও পৌঁছতে পারবে না নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ১টি ছয় এবং ১০টি চারের সাহায্যে ৬৯ বলে অপরাজিত ৭৮ রানের দুরন্ত একটি ইনিংস থেলেই পার্থক্য গড়ে দেন এডওয়ার্ডস। তাঁর কাঁধে ভর করেই ৪৩ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৫ রান তোলে ডাচরা।
জবাবে ৪২.৫ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিল প্রোটিয়ারা। কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন ডেভিড মিলার। কিন্তু ৫২ বলে তাঁর করা ৪৩ রান দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ দিকে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন কেশব মহারাজ (৪০)। শেষ উইকেটে ৪১ রান যোগ করেন কেশব মহারাজ এবং লুঙ্গি এনগিডি। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হল প্রোটিয়াদের।
ম্যাচের পর এডওয়ার্ডস বলেন, ‘আমি মনে করি, গত কয়েকটা ম্যাচে আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছিল, ইনিংস শেষ হওয়ার আগেই উইকেট হারিয়ে ফেলছিলাম। তাই আমি শুধু ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভেবেছিলাম এবং অন্য প্রান্ত থেকে আমাকে সুন্দর ভাবে সমর্থন করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: বিশৃঙ্খল আচরণ KKR তারকার, আইসিসি-র নিয়ম ভেঙে শাস্তি পেলেন ইংল্যান্ড বধের অন্যতম কারিগর
রোলফ ভ্যান ডার মারউইয়ের (১৯ বলে ২৯) সঙ্গে পার্টনারশিপ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে এডওয়ার্ডস দাবি করেছেন যে, এটি মজাদার ছিল। এবং শেষের দিকে তিনি আরিয়ান দত্তকে স্ট্রাইকে দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন। কারণ ঝোড়ো মেজাজে ছিলেন আরিয়ান। তিনি ৯ বলে অপরাজিত ২৩ রান করেছিলেন।
এডওয়ার্ডস বলেছেন, ‘রোলফের সঙ্গে ব্যাট করাটা বেশ মজার ছিল। ও কিছু অদ্ভূত জায়গায় হিট করে এবং উইকেটের মধ্যে কঠিন সিঙ্গল নেয়, যা সব সময়েই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। আমি আরিয়ানকে শুধু স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আর ও বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠাচ্ছিল। অবশ্যই আমার দেখা সেরা নকগুলির মধ্যে এটি একটি। বিশেষ করে ১০ নম্বর ব্যাটারের থেকে।’
প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে এডওয়ার্ডস বলেছেন যে, তিনি দলের জন্য গর্বিত এবং দাবি করেছেন, তাঁরা প্রতিযোগিতার জন্য উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। ডাচ অধিনায়কের মতে, ‘ছেলেদের জন্য সত্যিই খুব গর্বিত। আমরা এই টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে খেলার আশা নিয়ে এসেছি। তবে এটি করতে হলে, আমাদের শীর্ষ দলগুলিকে হারাতে হবে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্যই এই টুর্নামেন্টে ফেভারিট। তাই একটি লাইন অতিক্রম করতে পেরে খুশি।’