পাকিস্তান ক্রিকেটের ফের বড় ডামাডোল। আসলে পিসিবির অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির (আইএমসি) চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন জাকা আশরাফ। আশরাফ বলেছেন যে, পাকিস্তান ক্রিকেটে ভালোর জন্যই কাজ করছিলেন তিনি। শুক্রবার লাহোরে ব্যবস্থাপনা কমিটির চতুর্থ বৈঠকের পর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান তিনি। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই অবশ্য তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পিসিবি-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সভা শেষে, জাকা আশরাফ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি এমসি-এর চেয়ারম্যান এবং সদস্য পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এবং মাননীয় পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকরের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।’ বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, ‘তাঁর প্রতি আস্থা রাখার জন্য ও বিশ্বাস করার জন্য পিসিবি-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এবং পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতির জন্য তাঁর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’
গত বছরের জুলাইয়ে আইএমসির প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল জাকা আশরাফকে। কমিটিতে ছিলেন ১০ সদস্য। তাঁদের দায়িত্ব ছিল চার মাসের মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান পদের জন্য নির্বাচন আয়োজন করা। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা করতে না পারায়, গত নভেম্বরে কমিটির মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ান পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার উল হক কাকর। এই বোর্ডের প্রধান হিসেবে কে দায়িত্ব নেবেন, সেটা এখনও পিসিবি-র পক্ষে জানানো হয়নি।
আশরাফের অধীনে গত কয়েক মাসে পাকিস্তান ক্রিকেটে অনেক রদবদল হয়েছে। এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় তিন সংস্করণের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন বাবর আজম। টেস্টের নেতৃত্ব দেওয়া তুলে দেওয়া হয় শান মাসুদের হাতে। টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব পান শাহিন শাহ আফ্রিদি।
বদলে ফেলা হয় পুরো কোচিং স্টাফ। টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার, প্রধান কোচ গ্রান্ট ব্র্যাডবার্ন এবং ব্যাটিং কোচ অ্যান্ড্রু পাটিকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় আশরফের কমিটি। তাঁদের লাহোরের জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নতুন করে নিয়োগ করা হয়। পরে পদত্যাগ করেন তিন জনই। যদিও তাতে দলের ভাগ্য বদলায়নি। বিশ্বকাপের পর এখনও জয়ের দেখা পাচ্ছে না পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার বিপেক্ষে ৩-০ টেস্ট সিরিজ হারার পর, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম চার ম্যাচেই হেরে বসে রয়েছে মেন ইন গ্রিন।
এর আগে গত নভেম্বরে জাকা আশরফের বিরুদ্ধে ‘দ্বিধাহীন ভাবে বিভিন্ন অপকর্ম এবং অসাংবিধানিক কিছু সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তাঁর নিজের ব্যবস্থাপনা কমিটিরই একজন সদস্য। সেই সদস্য অভিযোগ আনেন, আশরাফের সময়েই বোর্ডে অসন্তোষ ছড়িয়েছে সবচেয়ে বেশি। সেটি প্রশাসনের ভিতরে এবং বাইরে দুই জায়গাতেই।