পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের ডিউটি পেয়েছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষকরা। তাই নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের একাংশ। এই অবস্থায় ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছেন ওই সমস্ত শিক্ষকরা। অভিযোগ উঠেছে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষকদেরও পঞ্চায়েত ভোটে ডিউটির জন্য চিঠি পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অবিলম্বে ডিউটি মুকুবের আর্জি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের অভিযোগ, শারীরিক প্রতিবন্ধী থাকা সত্ত্বেও এর আগে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে তাঁদের ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। এবার পঞ্চায়েত ভোটে তার পুনরাবৃত্তি হল। তাঁদের বক্তব্য, কেউ ৬০ শতাংশ, কেউ ৭০ শতাংশ আবার কেউ ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী। এই অবস্থায় তাঁরা ভোটের ডিউটি কীভাবে করবেন? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের দফতরে গিয়ে চিঠি দিচ্ছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষকরা। তবে আদৌও তাঁদের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের একাংশ।
বীরভূমের একটি স্কুলের এক প্রতিবন্ধী শিক্ষকের দাবি, তিনি ৭০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। হাঁটাচলা করতে গিয়ে তাঁর সমস্যা হয়। সেই কারণে তাঁকে বিশেষ গাড়িতে করে স্কুলে যেতে হয়। তাতেই তাঁকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। ফলের ভোটের ডিউটিতে গেলে আরও সমস্যায় পড়তে হবে বলে তাঁর আশঙ্কা। তিনি জানান, এর আগে লোকসভা নির্বাচনেও তাঁর ডিউটি পড়েছিল। তবে তিনি জেলা প্রশাসনের দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আর্জি মঞ্জুর হয়েছিল। এবারও ডিউটি মুকুবের আর্জি জানিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর তিনি পাননি।
একই অভিযোগ জানিয়েছেন নদিয়ার একটি স্কুলের এক প্রতিবন্ধী শিক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, গত বিধানসভা ভোটে তার ডিউটি পড়েছিল। প্রতিবন্ধী থাকায় যাতায়াতের সমস্যার কারণে ডিউটি মুকুবের জন্য জেলা প্রশাসনের দফতরে তখন আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁকে ভোটের ডিউটিতে যেতে হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, চেয়ারে বসে অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষককে ডিউটি করতে হয়েছে। এবারও তিনি জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়ে ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
যদিও জেলা প্রশাসনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েতে নির্বাচন কর্মীর অভাবে রয়েছে। সেই কারণে প্রতিবন্ধী শিক্ষকদেরও ভোটের কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানান, কোনও শিক্ষকের বেশি শারীরিক সমস্যা থাকলে সে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করেছে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। তাদের বক্তব্য, প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের যাতে ভোটের কাজে ব্যবহার করা না হয় সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানাতে হবে।