বাংলা নিউজ > ভোটযুদ্ধ > গ্রামের লড়াই > Panchayat election 2023: সুখের সংসারে ‘লড়াই’, BJP-র টিকিটে লড়াই স্বামীর, স্ত্রী লড়ছেন তৃণমূলের হয়ে

Panchayat election 2023: সুখের সংসারে ‘লড়াই’, BJP-র টিকিটে লড়াই স্বামীর, স্ত্রী লড়ছেন তৃণমূলের হয়ে

পঞ্চায়েতে একে অপরের প্রতিপক্ষ স্বামী। প্রতীকী ছবি

ভরতপুরের ১ নম্বর ব্লকের জজান গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী প্রধান পাপিয়া মাঝি। তাঁর স্বামী গোলবদন মাঝি আগে তৃণমূলে ছিলেন। স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান হলেও কার্যত তিনিই দায়িত্ব সামলাতেন। কিন্তু, এবার তিনি তৃণমূল থেকে টিকিট পাননি। 

সাংসারিক জীবনে ওরা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু, রাজনৈতিক ময়দানে এবার ওরা একে অপরের প্রতিপক্ষ। জোড়া ফুলের টিকিতে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ছেন স্ত্রী, অন্যদিকে প্রধান বিরোধী বিজেপির টিকিটে এবার ভোটযুদ্ধের ময়দানে নেমেছেন স্বামী। পঞ্চায়েত ভোটে এমনই বিরল লড়াই দেখতে চলেছে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দারা।

ভরতপুরের ১ নম্বর ব্লকের জজান গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী প্রধান পাপিয়া মাঝি। তাঁর স্বামী গোলবদন মাঝি আগে তৃণমূলে ছিলেন। স্ত্রী পঞ্চায়েত প্রধান হলেও কার্যত তিনিই দায়িত্ব সামলাতেন। কিন্তু, এবার তিনি তৃণমূল থেকে টিকিট পাননি। তাতেই দলের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওই তৃণমূল নেতা। আশা ছিল স্ত্রীর পাশাপাশি তিনিও এবার টিকিট পেয়ে তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়বেন। তবে তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ায় শেষে বিজেপিতে যোগদেন গোলবদন। ৮ নম্বর আসন থেকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এতদিন ভোটের প্রচারের কাজে একসঙ্গে লড়াই করেছেন স্বামী-স্ত্রী। তবে এবার সেই ছবিটা একেবারেই উলটো। বাড়িতে একসঙ্গে কাটালেও ভোটের ময়দানে প্রচারে বেরিয়ে তাঁরা একই অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রত্যেকেই এখন আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচনী প্রচারে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। দুপুরে একসঙ্গে বসে আহার করছেন। আবার প্রচারে বেরিয়ে যাচ্ছেন। রাত অবধি নির্বাচনী প্রচার চালানোর পর আবার তারা ঘরে ফিরছেন। একসঙ্গে সংসার করছেন। যদিও তাতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পাপিয়া মাঝি। তিনি বলেন, ‘স্বামী আলাদা দলের প্রার্থী ঠিকই। আমরা প্রত্যেকে আলাদা আলাদাভাবে প্রচারে যাচ্ছি। তবে এতে আমাদের সংসার জীবনে কোনও প্রভাব পড়েনি। আমরা একসঙ্গেই থাকছি। আমাদের সংসার ভাঙেনি। আমি কোনও আপত্তি তুলিনি।’

পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হবেন বলেই আশাবাদী গোলবদন। তিনি তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, তৃণমূলের জমানায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা নির্বাচনে প্রচারের মাধ্যমে তিনি জনগণের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। যদিও পাপিয়া মাঝি বলেন, ‘তৃণমূলের আমলে এলাকায় প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। কী কী উন্নয়ন হয়েছে মানুষ তা দেখেছে। উন্নয়নের জন্য মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেবে।’

প্রসঙ্গত, আগে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৪টি আসন ছিল। এখন আরও চারটি আসন বেড়ে যাওয়ার ফলে সেখানে ১৮ টি আসন হয়েছে। প্রতিটি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গোলদনকে প্রার্থী না করা প্রসঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, দলের নির্দেশ অনুযায়ী একই পরিবার থেকে দুজনকে প্রার্থী করা যায়নি। তা ছাড়া ওই এলাকায় পরিচিত মুখ হলেন পাপিয়া মাঝি। তাই তাঁকে দল থেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূলের আমলে কী দুর্নীতি হয়েছে তা সবই নিজের চোখে দেখেছেন গোলবদন। সেই কারণেই হতাশা থেকে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

 

বন্ধ করুন