পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কিছুদিন আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল কুড়মি সম্প্রদায়। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তারা কোনও স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না বলেই জানিয়েছিল। তবে নির্দল থেকে কেউ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে তাতে আপত্তি থাকবে না বলে জানিয়েছিলেন কুড়মি নেতারা। সেইমতোই নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে এবার কুড়মিরা শাসক দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেদের প্রার্থীর দাঁড় করাল। আজ মনোনয়নের শেষদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কুড়মি সমাজের ৪০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে যান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলজুড়ে কুড়মি সম্প্রদায়ের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা গড়িয়ে গেল পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত।
কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনের ঘাগরঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমন মাহাতো বলেন, ‘শাসক দল থেকে বিজেপি-সহ সমস্ত দলই বলেছে কুড়মি নাকি কোনও ফ্যাক্টর নয়। তাই আমরা আমাদের জাতের ভিত্তিতে পৃথক প্রার্থী দাঁড় করিয়েছি।’ জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে ৩৫ জন গ্রাম পঞ্চায়েতে, ২ জন জেলা পরিষদে, ৩ জন পঞ্চায়েত সমিতিতে কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দিতে যান। কুড়মিরা শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দেবে বলেই ওই নেতা জানিয়েছেন। এই লক্ষ্যে জঙ্গলমহলে কুড়মিরা দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলকে প্রচার করতে দেয়নি গত একমাস ধরে। পরিষ্কার তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের কাছে সমাজ আগে। অবিলম্বে কুড়মিদের এসটি সম্প্রদায়ভুক্ত না করলে এই বিদ্রোহ চলবে বলে তাঁরা আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সেজন্য যে সমস্ত কুড়মি নেতারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের দল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দেয় কুড়মি নেতৃত্ব।
শালবনির তৃণমূল নেতা নেপাল সিং বলেন, ‘জঙ্গলমহলের মাহাতো-কুড়মিদের অনেকেই আমাদের সঙ্গে আছেন। ওঁরা আলাদা করে কেন রাজনীতিতে মিশতে চাইছেন, তা জানি না। তবে এর কোনও প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে না।’ বুধবার শালবনি বিডিও অফিসে মনোনয়ন দিতে শেষ মুহূর্তে হাজির হওয়ায় কুড়মিদের ডিসিআর কাটা সম্ভব হলেও শেষমুহূর্তে সকলের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার তাদেঁর ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছন বলে জানিয়েছেন সুমন মাহাতো।