আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে একদফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। আর এই নির্বাচনটি হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই। এমনই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। যা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টে আপিল মামলা করেছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পালন না করে বিলম্ব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালত অবমাননা করেছে। এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার সেই সূত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ২৭ জুনের মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সমস্ত তথ্য হলফনামা দিয়ে জমা দিতে হবে। আগামী ২৮ জুন পরবর্তী শুনানি হবে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছিল তা পালন না করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালত অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলে পৃথক দুটি পিটিশন করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং মালদার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা ঠেকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই নির্দেশ ইচ্ছা করেই মানা হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়। আর তার প্রেক্ষিতেই এবার তথ্য তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ কী? আজ, শুক্রবার এই মামলার শুনানি ছিল। এই মামলাটি আসলে আদালত অবমাননার। আর প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের প্রায় ২০,৫৮৫ আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। ফলে মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং প্রার্থী দিতে না পারার ঘটনায় একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। ফলে পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে না পেরে এক ব্যক্তি জনস্বার্থ মামলা করেন। সেই মামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রধান বিচারপতি জানান, পছন্দের প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ না মেলায় তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়েছে বলে মামলাকারী ব্যক্তির অভিযোগ।
আর কী জানা যাচ্ছে? এবার এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দফা বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোককুমার চক্রবর্তী। আজ শুক্রবার মামলার শুনানিতে তাঁরা আদালতকে জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে সেটা দিতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু ২০১৩ সালে পাঁচ দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল। এবারও পঞ্চায়েত সেই একই মডেলে হলে ৮২ হাজার বাহিনী দিতে সমস্যা হবে না। আসলে কৌশলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দফা বাড়ানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।