হাতে আর একসপ্তাহ বাকি নেই। তারপর রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আগামী ৮ জুলাই একদফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে বাংলায়। সুতরাং প্রচার থেকে শুরু করে পরিকল্পনা করছে সব রাজনৈতিক দল। কিন্তু এখন অর্থের টান দেখা দিয়েছে লাল পার্টির কোষাগারে। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি কোনও বিষয়ে খরচ না করার জন্য রাশ টেনেছে কমরেডকুল। উলটে নতুন আঙ্গিকে অর্থ সংগ্রহ করার কথা ভেবেছে সিপিএম। আগে দেখা যেত লাল শালু কিংবা কৌটো নাচিয়ে হাটে–বাজারে–রেলস্টেশনে অর্থ সংগ্রহ করতেন কর্মীরা। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন সিপিএমের নেতা–কর্মীরা। এখন আর এই পথে হাঁটতে চাইছেন না তাঁরা।
তাহলে বিকল্প পথ কী? কুপন বিলি করে অর্থ সংগ্রহের চল থাকলেও সেটি দলীয় কর্মীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাইরে এই কুপন বিলি করে টাকা তোলার কাজ করতে চাইছেন না সিপিএমের নেতা–কর্মীরা। কারণ এই পথে হাঁটলে অপপ্রচারের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা অর্থের বিষয়টি। যে যেমন পারবেন অর্থ দেবেন। আর সেটা মানুষজন যাতে করতে পারেন তার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে কিউআর কোড। এখানে স্ক্যান করে টাকা পৌঁছে দিতে পারবেন সাধারণ মানুষ থেকে বামমনস্ক মানুষজন। আসলে সিপিএমও ডিজিটাল মাধ্যমে পোক্ত হতে চাইছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই সিপিএম ফেসবুক লাইভ করতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে টুইট করছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতারা। আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৈরি করেছে প্যারোডি। ফলে ডিজিটাল মাধ্যমে তারা বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। তাই এবার রাস্তায় কৌটো নাচিয়ে আর অর্থ সংগ্রহ করতে রাজি নন তাঁরা। তাই বিকল্প পথ হিসাবে কিউআর কোড চালু করেছে রাজ্য সিপিএম। এবার অর্থ সংগ্রহের জন্য কিউআর কোড চালু করল সিপিএম। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথমবার এই পথে হাঁটল সিপিএম। বাঁকুড়া–সহ একাধিক জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এই কিউআর কোড চালু করা হয়েছে। আগামী দিনে বাকি জেলাগুলিও একই পথে হাঁটবে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘রাতের অন্ধকারে যারা টাকার লোভ দেখাবে তাদের দেখে নেব’, বীরভূমে হুঙ্কার কাজলের
কেন এমন ভাবনা সিপিএমের? এখন কেন্দ্র এবং রাজ্যের কোনও পক্ষেরই শাসকদল নয় সিপিএম। তাই আয় কমেছে। এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আধুনিক যে পদ্ধতি বাজারে এসেছে সেই পথেই হাঁটতে হবে। আবার অনেক কর্মী আছেন যাঁরা বিদেশে থাকেন। তাঁরা অর্থ পাঠাতে চাইলে এভাবে পাঠাতে পারবেন। আবার অনেকে আছেন যাঁরা গোপনে অর্থ সাহায্য করতে চান। তাঁরাও কিউআর কোড স্ক্যান করে টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে পুরনো পথ ছাড়া হচ্ছে না। সেটাও থাকছে। কারণ ওটা একটা মানুষের সঙ্গে সংযোগেরও মাধ্যম।’