গ্রামবাংলা কার? এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি করতে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা। কিন্তু তার মধ্যেই ব্যাপক উত্তেজনার খবর মিলতে শুরু করেছে। আজ, মঙ্গলবার সকালে বীরভূমের নানুরে গণনাকেন্দ্রে শুরু হয় ভোটগণনা। সেখানে সিপিএম কর্মীরা যেতেই বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রতিবাদে কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান সিপিএম কর্মীরা। তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। রাজ্যের ২২টি জেলার গ্রামীণ মানুষজনের মতামত ব্যালট বাক্সে বন্দি। সেগুলি রয়েছে ৭৬৭টি স্ট্রংরুমে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মোট ৩৩৯টি ভোট গণনাকেন্দ্রে সেই ব্যালট বাক্স খোলা শুরু হতেই বাইরে উত্তেজনা জারি।
এদিকে ভোট গণনা কেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ধারেকাছে কোনও জমায়েত করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক কেন্দ্রে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ৩৩৯টি কেন্দ্রে গণনার প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত, তার পর পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের আসনে গণনা করা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আজ বোমাবাজি করার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে প্রাণহানি, রক্তপাত, সংঘর্ষ, বোমাবাজি হয়েছে রাজ্যের নানা জেলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনের সংঘর্ষে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। ভোট পর্বে মোট ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে গণনাকেন্দ্রে যেতে বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে প্রতিবাদে মেদিনীপুরে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধরনায় বসার কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। ভোট গ্রহণ পর্বের মতো হিংসার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে ভোট গণনাকেন্দ্রে। এমনকী গণনাকেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। এক কোম্পানি আধাসেনা জওয়ানদের নিয়ে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলির পাহারায় মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ। তারপর হিংসার ঘটনার অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: বাজারে টাস্ক ফোর্সের হানার পরও সবজির দাম চরমে, নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের
আর কী দেখা গেল? ভোটগণনা শুরু হতেই এদিন গণনাকেন্দ্রের সামনে ডিজে বক্স বাজিয়ে নাচ শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। বীরভূমে নানুর হাইস্কুলের সামনে মঙ্গলবার সকালে এই ছবি দেখা গেল। গণনার দিনও মুর্শিদাবাদে উত্তেজনা ছড়াল। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী এবং তাঁর স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। তাঁদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ৩৩৯টি ভোটগণনা কেন্দ্রে স্ট্রংরুমের সংখ্যা ৭৬৭। গণনাকক্ষের সংখ্যা ৩,৫৯৪। গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল ঘোষণা করবেন কাউন্টিং অফিসার। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ফল ঘোষণা করবেন বিডিও। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে একজন করে অফিসার আছেন।